যাদুকাটা নদী ঘেঁষে শিমুলের লাল সাম্রাজ্য

জাহাঙ্গীর আলম ভুঁইয়া, সুনামগঞ্জ প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৩, ০১:১১ পিএম

প্রকৃতি শাসন করছে ঋতুরাজ বসন্ত। ফাল্গুন হাওয়া ও ফুলের সমারোহে রঙিন উৎসবে মেতেছে প্রকৃতি। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পুষ্প সমারোহে মানুষের কণ্ঠেও বসন্তের গান। সেই বসন্তেরই বার্তা ঘোষণা করছে সুনামগঞ্জের এক শিমুলবাগান। ফুলে ফুলে ভরে ওঠা বাগানটি যেন প্রকৃতিতে লালগালিচা বিছিয়ে রেখেছে।

শিমুলবাগানটি সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের উত্তরে বারেকটিলা মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশ ও দক্ষিণে পূর্ব দিকে রূপের রানীখ্যাত যাদুকাটা নদী ঘেঁষে গড়ে উঠেছে। প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে বিস্তৃত বাগানটি এশিয়ার বৃহত্তম শিমুলবাগান হিসেবে পরিচিত।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০২ সালে বাদাঘাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত জয়নাল আবেদীন উত্তর বড়দল ইউনিয়নের মানিগাঁও গ্রামে পতিত জমিতে তিন হাজারের অধিক শিমুল চারা রোপণ করেন। সময়ের পরিক্রমায় সেটি এখন আকর্ষণীয় ট্যুরিস্ট স্পট। বাগানটি উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের প্রয়াত সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন নিজ উদ্যোগে করেছেন বিধায় তার নাম অনুসারে জয়নাল আবেদীন শিমুলবাগান নাম রাখা হয়েছে।

শিমুলবাগানে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকেই ফুল ফুটতে শুরু করে। লাল ফুলের কল্যাণে পুরো এলাকায় হয়ে ওঠে রক্তিম আভা। ওপারে ভারতের মেঘালয় রাজ্য, মাঝে যাদুকাটা নদী আর এপারে শিমুলবাগান। স্থানীয়দের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিবছর ফাগুনে আগুনরাঙা প্রকৃতির এই রূপ উপভোগ করতে তাহিরপুরে আসেন পর্যটকরা। এ বছরও পয়লা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবসে পর্যটকদের উপচে পড়া ঢল নামে যাদুকাটার তীরের জয়নাল আবেদীন শিমুলবাগানে।

বাগান থেকে উপার্জনের পথ তৈরি হয়েছে স্থানীয় অনেকের। শিমুল ফুল কুড়িয়ে মালা, মাথায় দেওয়ার টায়রা বিক্রি করছেন অনেকে। মালা বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৫০ টাকায়। বাগানে ফুল কুড়িয়ে লাভ সাইন তৈরি করেছেন অনেকে। তার মধ্যে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে পর্যটকদের গুনতে হচ্ছে ৩০ টাকা।

রাজধানী ঢাকা থেকে আসা পর্যটক আশিকুর রহমান জামিল উদ্দিন জানান, বাগানের সৌন্দর্য অসাধারণ। তবে যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত না হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়।”

বাগানমালিকের ছেলে সাবেক চেয়ারম্যান রাকাব উদ্দিন বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি বাগানের সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও আগত পর্যটকদের জন্য সর্বোচ্চ সহায়তা করার। বাগানে ফুল ফুটুক আর না ফুটুক, প্রকৃতিপ্রেমীরা ছুটির দিনসহ বিশেষ দিনগুলোতে বেড়াতে আসেন। তারা শিমুলবাগান, বারেকটিলা ও যাদুকাটা নদীর অপার সৌন্দর্য উপভোগ করেন।”