দিগন্তজোড়া মাঠে সরিষার হলুদ দোলা

মো. নয়ন হোসেন, বেনাপোল (যশোর) প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২, ২০২২, ০৯:১৯ এএম

যশোরের শার্শা উপজেলায় সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে দিগন্তজোড়া ফসলের মাঠ। ফসলের মাঠের হলুদ রাজ্যে গুঞ্জনে মুখরিত মৌমাছির দল। মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের দোলায় কৃষকের চোখেমুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি। স্বপ্ন দেখছেন বাম্পার ফলনের। গত বছর স্থানীয় বাজারে উন্নত জাতের সরিষার দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা এবারও সরিষা চাষে অধিক আগ্রহী হয়েছেন।

ভোজ্যতেল হিসেবে সরিষা তেলের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। কৃষি বিভাগের সহযোগিতা ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলনের পাশাপাশি দামও ভালো পাওয়ার আশা করছেন কৃষকরা।

উপজেলার বিভিন্ন সরিষাক্ষেত ঘুরে দেখা যায়, মাঠে যেন কেউ সবুজের গায়ে হলুদের আলপনা দিয়ে রাঙিয়ে দিয়েছে। হলুদ ফুলে ভরে গেছে পুরো মাঠ। মাঠের পর মাঠ যেন হলুদের গালিচা। দিগন্তজুড়ে শুধু হলুদের সমারোহ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কৃষি বিভাগের পরামর্শে শার্শার নিজামপুর ইউনিয়ন, ডিহি, লক্ষ্মণপুর ইউনিয়নসহ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের কয়েকজন কৃষক পাঁচ থেকে ছয় বিঘা করে জমিতে অধিক ফলনশীল জাতের সরিষা চাষ করেছেন।

কৃষক হোসেন আলী সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “প্রতি বিঘা সরিষা চাষে খরচ হয়েছে প্রায় চার হাজার টাকা। এর বাজারে চাহিদা ভালো থাকে এবং দাম ভালো পাওয়া যায়। আশা করছি, বাম্পার ফলন হবে। গত বছরের মতো লাভবান হতে পারব।”

কৃষক আবু তাহের বলেন, “সরিষার চাহিদা ভালো থাকায় ক্ষতির সম্ভাবনা কম। আশা করছি এবারও দাম ভালো পাওয়া যাবে।”

সদর এলাকার কৃষক মামুন হোসেন বলেন, “বারি-১৪ জাতের সরিষার গাছ লম্বা হওয়ায় এর পাতা মাটিতে ঝরে পড়ে জৈব সারের কাজ করে। এ জাতের সরিষা আবাদের পর একই জমিতে বোরো আবাদে সারের পরিমাণও কম লাগে।”

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ কুমার মণ্ডল বলেন, কৃষকদের যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক-নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৪ হাজার ৫০০ কৃষককে সরিষা চাষে সরকারি প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। ভোজ্যতেলের আমদানি কমাতে সরকার তিন বছর মেয়াদি একটি মহাপরিকল্পনা নিয়েছে। এতে কৃষি বিভাগের মাধ্যমে সরকারি প্রণোদনা দিয়ে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। যেন এ বছর ৭ হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা যায়।