ঝরনার শীতলতায় গা ভাসাতে এবং পাহাড়ের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে টানা ছুটিতে খাগড়াছড়ি ও সাজেকে পর্যটক সমাগম বেড়েছে।
খাগড়াছড়ির বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে ভিড় করছেন পর্যটকরা। পাহাড়িকন্যা খাগড়াছড়িতে এবার ছুটিতে রেকর্ড পরিমাণ পর্যটক এসেছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে এসেছেন হাজারো সৌন্দর্য পিপাসু পর্যটক।
হোটেল-মোটেলে সব আগাম বুকিং। প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্রেও উপচে পড়া ভিড়। আলুটিলা রহস্যময় সুড়ঙ্গ, ঝুলন্ত সেতু, তারেং, রিছাংঝরনা সবখানেই পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে।
বুধবার (৫ অক্টোবর) থেকেই বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে ভিড় করেছেন পর্যটকরা। দেখা দিয়েছে পরিবহন সংকটও। এতে স্থানীয় অর্থনীতি বিকশিত হচ্ছে। তবে টেকসই পর্যটন গড়ে তুলতে আরও নতুন ট্যুরিস্ট স্পটগুলোর উন্নয়নের দাবি সংশ্লিষ্টদের।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে নয়নাভিরাম নানান দৃশ্য, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বৈচিত্র্যময় জীবনধারা, সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য, প্রকৃতি তৈরির নজরকাড়া হাজারো চিত্র। চার পাশে বিছিয়ে রাখা শুভ্র মেঘের চাদরের নিচে রয়েছে সবুজ বনারাজিতে ঘেরা ঢেউ খেলানো অসংখ্য ছোট-বড় পাহাড়। তার মধ্য দিয়ে চলে গেছে আঁকা-বাঁকা সড়ক। এর মধ্যে রয়েছে আলুটিলার পর্যটন কেন্দ্র, রিছাং ঝরনা, রহস্যময় সুড়ঙ্গ, জেলা পরিষদ পার্কের ঝুলন্ত সেতু ও মায়াবিনী লেকসহ প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্র এখন পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। নিরাপত্তার ঘাটতি না থাকায় রাত পর্যন্ত পর্যটকরা ঘুরছেন নির্বিঘ্নে। অতিরিক্ত পর্যটকের ভারে যেমন পরিবহন সংকট দেখা দিয়েছে, তেমনি হোটেল-মোটেলেও সিট নেই। ফলে আসার আগে আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করে আসতে হবে। অন্যথায় পরিবার-পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে।
পর্যটন কেন্দ্রগুলোর উন্নয়ন হওয়ায় ও পাহাড়ে সড়ক যোগাযোগ বিস্তৃত হওয়ায় খুশি ভ্রমণপিপাসুরা।
খাগড়াছড়ি হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া জানান, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে খাগড়াছড়িতে আসা পর্যটকদের থাকার-খাওয়ার রয়েছে বহু হোটেল- রেস্টুরেন্ট। বিপুলসংখ্যক পর্যটক আসায় হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরাও খুশি।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মো. নাইমুল হক জানান, খাগড়াছড়িতে আসা পর্যটক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি পর্যটন স্পর্টে নিয়োগ করা হয়েছে পোশাকের পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক পুলিশ।
এদিকে খাগড়াছড়ি পর্যটন মোটেলের ব্যবস্থাপক এ কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, “গত এক দশকে খাগড়াছড়িতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সড়ক যোগাযোগ বাড়ায় পর্যটক সমাগম বেড়েছে। এতে স্থানীয় অর্থনীতির বিকাশ হয়েছে। গড়ে উঠেছে হোটেল মোটেল। অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে। তবে পর্যটন কেন্দ্রের চলমান উন্নয়ন কাজ শেষ হলে পর্যটন অর্থনীতি আরও বিকশিত হবে।”
সংশ্লিষ্টরা জানান, এবারের টানা ছুটিতে খাগড়াছড়ি ও সাজেকে অন্তত ২০ হাজার পর্যটক ভ্রমণ করতে পারে। আগামী রোববার পর্যন্ত এমন পর্যটক সমাগম থাকবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।