বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমান, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), ইউএনওর বাসভবনে দায়িত্বরত আনসার সদস্যসহ ৩০ থেকে ৪০ জনের নামে আদালতে দুটি মামলার আবেদন করা হয়েছে।
রোববার বেলা ১১টার দিকে জেলার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে এ আবেদন করেন বরিশালের প্যানেল মেয়র-২ রফিকুল ইসলাম খোকন ও সিটি করপোরেসনের রাজস্ব কর্মকর্তা বাবুল হালদার।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাইয়ুম খান কায়সার জানান, আবেদনের শুনানি শেষে বিচারক মাসুম বিল্লাহ রায় পরে দেবেন বলে জানিয়েছেন।
বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মোহাম্মদ ইউনুস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আবেদনে, ইউএনও মুনিবুর রহমানের বিরুদ্ধে সিটি করপোরেশনের কাজে বাধা দান, বিনা উসকানিতে বিসিসির কর্মচারিদের ওপর গুলিবর্ষণের নির্দেশ দেওয়া, হামলা, গুলিবর্ষণের মাধ্যমে একাধিক ব্যক্তির অঙ্গহানির অভিযোগ করা হয়েছে।
প্যানেল মেয়র রফিকুল ইসলামের করা মামলার আবেদনে ইউএনও মুনিবুর রহমান, কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি নুরুল ইসলাম, এসআই শাহজালাল মল্লিক ও ইউএনওর বাসভবনে দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের বিবাদী করা হয়েছে।
সিটি করপোরেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা বাবুল হালদারের করা মামলার আবেদনে ইউএনও মুনিবুর রহমান ও তার বাসভবনে দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের বিবাদী করা হয়েছে।
গত বুধবার রাতে ব্যানার অপসারণ নিয়ে বরিশাল সদরের ইউএনও মুনিবুর রহমানের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাসের কথাকাটাকাটি হয়। প্রশাসনিক কর্মকর্তার সঙ্গে থাকা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এ সময় ইউএনওর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। একসময় আনসার সদস্যদের সঙ্গে হাতাহাতি শুরু হলে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ইউএনওর বাসায় হামলার চেষ্টা চালান। আনসার সদস্যরা গুলি ছুড়লে প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাসসহ চারজন আহত হন।
সংঘর্ষের পর সদর ইউএনও কার্যালয়ের সামনে পুলিশ অবস্থান নিলে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা আবার ইউএনওর বাসভবনে হামলার চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ ও সরকারদলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে।
হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের হওয়া দুই মামলাতেই সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। তিনি বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তার নির্দেশে হামলার ঘটনা ঘটে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
সংঘর্ষে মেয়র ও প্যানেল মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকনসহ ৩০ জন আহত হন, যদিও আওয়ামী লীগের দাবি, আহতের সংখ্যা ৭০। এ ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও ইউএনও মুনিবুর রহমানের করা দুই মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে মেয়রকে। মামলার মোট আসামি ৬০২ জন, তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।