জাতীয় সংসদের সদ্য প্রয়াত উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর ফরিদপুর-২ (সালথা-নগরকান্দা ও কৃষ্ণপুর) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন তার দুই ছেলেসহ অন্তত ১৫ জন নেতা। আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নের আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল শনিবার (১ অক্টোবর) বিকাল ৫টা পর্যন্ত। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে এ আসনের উপনির্বাচন। এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা চেয়ে ১৫ জনের তথ্য গণমাধ্যমের কাছে এসেছে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুর পর থেকে তাঁর আসনে কে হবেন নৌকার মাঝি, তা নিয়ে সালথা ও নগরকান্দায় ব্যাপক আলোচনা চলে আসছে। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডি কার্যালয়ে দলীয় মনোনয়ন চেয়ে আবেদন করেছেন একাধিক নেতা। সাজেদা চৌধুরীর উত্তরসূরি হিসেবে তাঁর দুই ছেলে আয়মন আকবর বাবলু চৌধুরী ও শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী দলীয় মনোনয়ন চেয়ে আবেদন করেছেন।
সাজেদা চৌধুরী ছেলেরা ছাড়াও আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়ে আবেদন করেছেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য বিপুল ঘোষ, বাংলাদেশ সেনা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক উপকমিটির সদস্য মেজর (অব.) আতমা হালিম, নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় উপ কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন মিয়া, নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান সরদার, ফরিদপুর জেলা শ্রমিক লীগের সাবেক সহ-সভাপতি সাইফুজ্জামান চৌধুরী জুয়েল, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য মো. সাব্বির হোসেন, ফরিদপুর জেলা মৎস্যজীবী লীগের আহ্বায়ক আব্দুস সোবহান, সাংবাদিক লায়েকুজ্জামান লায়েক, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু ইউসুফ মিয়া, কালাচাঁদ চক্রবর্তী, কাজী দেলোয়ার হোসেন ও এ.বি.এম. মশিউল আলম (ভুলু)।
এ ছাড়াও আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়ে আবেদন করেছেন ফরিদপুর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান হাবিব। তবে তিনি কিছুদিন আগে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপির দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করেন বলে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডি কার্যালয়ে সূত্রে জানা যায়, দলীয় মনোনয়ন চেয়ে ১৫ জন আবেদন করেছেন।
এ ব্যাপারে সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি এ ব্যাপারে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বেলায়েত হোসেন মিয়া বলেন, “সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা ছিলেন। তাই সবাই তাঁকে সম্মান প্রদর্শন করে এমন দৃষ্টান্ত দেখায়নি। সবারই তো ইচ্ছে আকাঙ্ক্ষা থাকে। তাই সবাই দলীয় মনোনয়ন চাইতেই পারেন। এটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। তবে দল ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যাকে সমর্থন ও নৌকা দেবেন, আমরা তার পক্ষেই কাজ করবো।”
সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে শূন্য হওয়া ফরিদপুর-২ আসনের উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ৫ নভেম্বর। নির্বাচন কমিশন ২৬ সেপ্টেম্বর এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ১০ অক্টোবর, বাছাই ১২ অক্টোবর ও প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১৯ অক্টোবর। এ উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। ফরিদপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন।