৪৪ বছরের জট খোলার গল্প

নাটোর প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২২, ০৩:০৭ পিএম

প্রতিষ্ঠার ৪৪ বছর পর নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই প্রথম অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বাচ্চা প্রসব করানো হয়েছে। সেই সঙ্গে শুরু হয়েছে আধুনিক অল্ট্রাসনোগ্রাম। আর দেড় যুগ পর শুরু হয়েছে এক্স-রে কার্যক্রম।

বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রথম অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এই নবযাত্রা শুরু হয়।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৮ সালে বড়াইগ্রাম হাসপাতালের যাত্রা শুরু হয়। ২০২০ সালে হাসপাতালটি ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। নতুন ভবনে সুপরিসর আধুনিক অপারেশন কক্ষ থাকলেও ছিল না প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। আবার ২০০৪ সালে একটি এক্স-রে মেশিন বরাদ্দ হলেও এতদিন সেটি ছিল বাক্সবন্দি। একটি আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও তার কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি দক্ষ চিকিৎসকের অভাবে।

কথায় আছে—ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। সেই ইচ্ছা থেকেই অনেক সীমাবদ্ধতাকে জয় করে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নবজাগরণের যাত্রা শুরু করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ খুরশীদ আলম।

বৃহস্পতিবার রাতে (২৯ সেপ্টেম্বর) বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. খুরশীদ আলম তার ব্যক্তিগত ফেইসবুক ওয়ালে এই অসম্ভবকে সম্ভব করার গল্প তুলে ধরেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন—

গল্পটা ৪৪ বছরের জট ৪ মাসে খোলার।

বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রতিষ্ঠাকাল ৪৪ বছর, আর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে আমার যোগদান ৪ মাস।

চার মাসে একেবারে শূন্য থেকে একটা ওটি সেটআপ রেডি করাটা বেশ চ্যালেঞ্জই ছিল। টিম বড়াইগ্রাম আজ সেটাই করিয়ে দেখালো।

আলহামদুলিল্লাহ্‌।

আজ থেকে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চালু হলো সুপরিসর আধুনিক অপারেশন থিয়েটার। পর্যায়ক্রমে সব ধরনের অপারেশনের সুবিধা ভোগ করবে বড়াইগ্রামবাসী। আজ প্রথম সিজারিয়ান সেকশন অপারেশনের মাধ্যমে ভূমিষ্ঠ যমজ সন্তান ও জন্মদাত্রী মা তিনজনই সুস্থ আছে।

অপারেশনের কারিগর হিসেবে ছিলেন জুনিয়র কনসালটেন্ট (এনেস্থিসিয়া) ডা. মো. মেহেতাজুল ইসলাম, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ডলি রানি, ডা. মো. মুক্তার হোসেন।

এ প্রসঙ্গে ডা. খুরশীদ আলম বলেন, প্রথম দিনে দুটি সিজারিয়ান সেকশন অস্ত্রোপচার হয়েছে। প্রথমটি উপজেলার ভবানিপুর গ্রামের বৃষ্টি ও প্লাবন রোজারিও দম্পতির জমজ পুত্র সন্তান হয়। দ্বিতীয়টি জোনাইল গ্রামের প্রিয়াঙ্কা ও নিখিল দম্পতির পুত্র সন্তান।

কথা হয় প্রথম দম্পতির স্বামী প্লাবন রোজারিওর সঙ্গে। তিনি বলেন, “স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীর মাধ্যমে খবর পেয়ে হাসপাতালে যোগাযোগ করি। সরকারি হাসপাতালে এভাবে অস্ত্রোপচার এবং সেবা পাবো তা কল্পনাই করতে পারতেছি না। সত্যি আমি ভাগ্যবান।”