সনাতন ধর্মাম্বলীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। পূজায় প্রতিটি বাড়িতেই অতিথি আপ্যায়ন করনো হয় নাড়ু দিয়ে। নাড়ু তৈরির প্রধান উপকরণ হলো নারকেল, গুড় অথবা চিনি। এরই ধারাবাহিকতায় রাজশাহীতে বছরের অন্য সময়ের তুলনায় আসন্ন দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে বেড়েছে নারকেল, গুড়ের কদর। তবে দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে নারকেল ও গুড়ের দাম কিছুটা বেড়েছে।
এ বছর রাজশাহী মহানগরসহ ৯টি উপজেলায় ৪৫০টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। ১ অক্টোবর থেকে শুরু হবে দুর্গাপূজা, শেষ হবে ৫ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে। পূজার এই ৫ দিনে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিটি বাড়িতে জামাই থেকে শুরু করে সকল অতিথি আপ্যায়ন হয় হরেক রকমের নাড়ু, মুড়ি, মুড়কিসহ নানা মিষ্টান্ন দিয়ে। রাজশাহী মহানগরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার হাট বাজারে দোকানের পাশাপাশি মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন নারকেল।
রাজশাহী সাহেব বাজার মনিচত্তরের নারকেল ব্যবসায়ী ও জালাল ফল ভাণ্ডারের প্রোপাইটার শরিফুল ইসলাম বলেন, “নারকেল পর্যাপ্ত রয়েছে। সে অনুযায়ী ক্রেতা এখন কিছুটা কম হলেও আশা করছি দুই-একদিনের মধ্যে বেচাকেনা জমে উঠবে। নারকেল আগে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হতো। এখন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়।”
গুড় ব্যবসায়ী আমিনুল হক বলেন, “কিছু দিন আগে ১০০/১১০ টাকা ছিল। এখন তা এখন ১২০/১৩০ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারে গুড়ের চাহিদা থাকলেও সরবরাহ কম হওয়ায় দাম একটু বেড়েছে।”
মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট বাজারে প্রতিজোড়া নারকেল বিক্রি হচ্ছে আকার ভেদে ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। গুড়ও বিক্রি হচ্ছে পর্যাপ্ত। প্রতি কেজি গুড় বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা থেকে ১২০ টাকায়। প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। তবে পাইকারি নারকেলের দোকানে পর্যাপ্ত বিক্রি থাকলেও খুচরো দোকানে কমেছে নারকেলের বিক্রি।
মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট বাজারে নারকেল কিনতে আসা নিতাই কুমার বলেন, “অন্য বছরের তুলনায় এ বছর নারকেলের দাম বেশি। পূজায় অনেক অতিথি সমাগম বাসায়। তাদের আপ্যায়ন করতে আমরা বিভিন্ন ধরণের নাডু পরিবেশন করি। তাই নারকেল বেশি দাম দিয়েই কিনতে হচ্ছে। গুড়ের দাম কিছুটা সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে।”
এক নারকেল ক্রেতা বলেন, “সারা বছর নারকেল না কিনলেও পূজায় নারকেল কিনতে হয়। এবার দাম বেশি হওয়ায় নারকেল কম কিনেছি। পূজাতে বাসায় নাড়ু করতে করতে হয়, ছেলে-মেয়েরা আছে তারা নাড়ুর জন্য জেদ ধরেছে। তাই বাধ্য হয়ে কিনলাম।”
কেশরহাট বাজারে নিয়মিত খুচরো নারকেল বিক্রেতা সাদ্দাম হোসেন বলেন, “বাজারে মৌসুমী ব্যবসায়ীদের সংখ্যা পূজা উপলক্ষে বেড়ে গেছে। এর প্রভার বাজারে পড়েছে। এ বছর নারকেলের দামও একটু বেশি। তারপরেও বছরের অন্য সময়ের তুলনায় পূজা উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন কম নারকেল কিনছেন।”
কেশরহাট বাজারের নারকেল ব্যবসায়ী আবু রায়হান জানান, পূজা উপলক্ষে নারকেল পর্যাপ্ত পরিমাণে বিক্রি হচ্ছে। এ বছর ডাবের দাম বেশি থাকায় এর প্রভাব নারকেলের ওপর পরেছে। তাই অন্য বছরের তুলনায় এ বছর নারকেলের দাম একটু বেশি।