মায়ের লাশ শনাক্তে ফুলপুর যাচ্ছেন মরিয়ম

খুলনা প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২২, ১১:৪০ এএম

ময়মনসিংহের ফুলপুরে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাতনামা এক নারীর লাশকে নিজের মা রহিমা বেগমের (৫২) বলে মনে করছেন তার মেয়ে মরিয়ম মান্নান। বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি এ দাবি করেন। ‘মায়ের লাশ’ শনাক্তে শুক্রবার সকালে ময়মনসিংহের ফুলপুর থানার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন তিনি।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১০ সেপ্টেম্বর সকালে ময়মনসিংহের ফুলপুর থানার বওলা এলাকায় একটি কবরস্থানের ঝোপজঙ্গল থেকে অজ্ঞাতনামা নারীর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধার হওয়া ওই লাশের পোশাক ও আলামত সম্পর্কে থানায় জানতে চান মরিয়ম। পোশাক ও উদ্ধার হওয়া আলামতের কথা শুনে নিজের মায়ের লাশ বলে দাবি করেন মরিয়ম।

এ নিয়ে বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে মরিয়ম মান্নান ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “আমার মায়ের লাশ পেয়েছি এই মাত্র।”

পরে আরেকটি পোস্টে মরিয়ম লেখেন, “আর কারও কাছে আমি যাব না! কাউকে আর বলব না, আমার মা কোথায়! কাউকে বলব না, আমাকে একটু সহযোগিতা করুন! কাউকে বলব না, আমার মাকে একটু খুঁজে দেবেন! কাউকে আর বিরক্ত করব না! আমি আমার মাকে পেয়ে গেছি!”

এদিকে ময়মনসিংহের ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল গণমাধ্যমকে জানান, ১০ সেপ্টেম্বর সকালে থানার বওলা এলাকায় একটি কবরস্থানের ঝোপজঙ্গল থেকে ৩০ বছর বয়সী অজ্ঞাতনামা নারীর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ১২ সেপ্টেম্বর লাশটি দাফন করা হয়।

ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন আরও জানান, মরিয়ম বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফোন করে বলেছেন তিনি সকালে থানায় এসে জব্দ করা নারীর পোশাকসহ অন্যান্য আলামত দেখবেন। যদি তার পোশাক দেখে মেয়েটি বলেন এগুলো তার মায়ের, তাহলে চূড়ান্তভাবে লাশ শনাক্তে মেয়ের ডিএনএ পরীক্ষা করানো হতে পারে।

এর আগে ২৭ আগস্ট রাত ১০টার দিকে মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার উঠানের নলকূপে পানি আনতে গিয়ে নিখোঁজ হন রহিমা বেগম। এ ঘটনায় ওই রাতেই রহিমা বেগমের ছেলে দৌলতপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরদিন তার মেয়ে আদুরী আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা পরিচয়ের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় অপহরণ মামলা করেন।

এ মামলায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ১৪ সেপ্টেম্বর মামলাটি পিবিআইতে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এরপর প্রক্রিয়া মেনে ১৭ সেপ্টেম্বর নথিপত্র বুঝে নেয় পিবিআই। এখন এই মামলা তদন্ত করছেন পিবিআইয়ের পরিদর্শক আব্দুল মান্নান।

পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, “এ পর্যন্ত পুলিশ ও র‌্যাব যৌথ অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে। আদালতে বিষয়টি শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।”

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, “রহিমা খাতুন নিখোঁজের ঘটনায় তার স্বামী হেলাল হাওলাদারসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র‌্যাব।”

গ্রেপ্তাররা হলেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রধান প্রকৌশল কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া, রহিমা খাতুনের দ্বিতীয় স্বামী হেলাল হাওলাদার, দৌলতপুর মহেশ্বরপশা বণিকপাড়া এলাকার মহিউদ্দিন, পলাশ ও জুয়েল এবং হেলাল শরীফ।