রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত আসনে সদস্য পদে বাগমারা উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল হকের দুই স্ত্রী প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন ইউপির চেয়ারম্যান রেজাউল হক।
ওই ইউপির চেয়ারম্যানের নাম রেজাউল হক। তিনি আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্য এনামুল হকের ছোট ভাই। স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার বিষয়ে শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) তিনি নিজের ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। এছাড়া শুক্রবার সন্ধ্যায় রেজাউল হক তার নিজ কার্যালয়ে ইউপির সাধারণ সদস্য ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ডেকে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার বিষয়টি জানান।
রেজাউল হকের দুই স্ত্রী হলেন নাছিমা বিবি ও ফিরোজা খাতুন। প্রথম স্ত্রী নাছিমা বিবি মাড়িয়া ইউনিয়নের শিকদারী এলাকায় রেজাউল হকের নিজস্ব বাড়িতে থাকেন। দ্বিতীয় স্ত্রী ফিরোজা খাতুন বাগমারা উপজেলা পরিষদের ভবানীগঞ্জের একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর নাছিমা ও ফিরোজা দুজনেই সক্রিয়ভাবে প্রচারণা শুরু করেন। এর মধ্যে রেজাউল নাছিমাকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য বলেন। নাছিমা অনড় থাকায় রেজাউল হক তাকে তালাক দেন।
জেলা পরিষদ নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, ১৭ অক্টোবর রাজশাহী জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে বাগমারা, মোহনপুর ও দুর্গাপুরে সংরক্ষিত সদস্য পদে সাত প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে বাগমারা উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল হকের দুই স্ত্রী নাছিমা বিবি ও ফিরোজা খাতুন প্রার্থী হয়েছেন। অন্য পাঁচ প্রার্থী হলেন পারুল বিবি, সুলতানা পারভীন, রাবেয়া খাতুন সীমা, লাল বানু ও নারগিস বিবি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রথমে নাছিমা বিবি সংরক্ষিত সদস্য পদে প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন। পরে রেজাউল হক তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী ফিরোজা খাতুনের পক্ষে প্রচারণা শুরু করেন। ১৫ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর নাছিমা ও ফিরোজা দুজনেই সক্রিয়ভাবে প্রচারণা শুরু করেন। এর মধ্যে রেজাউল নাছিমাকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য বলেন। তবে নাছিমা অনড় থাকায় রেজাউল গতকাল তাকে তালাক দেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রেজাউল হক তাঁর নিজ দপ্তরে ইউপির সাধারণ সদস্য ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ডাকেন। এ সময় তিনি প্রথম স্ত্রী নাছিমা বিবিকে তালাক দিয়েছেন বলে জানান। এ সংক্রান্ত কাগজপত্র তিনি উপস্থিত লোকজনকে দেখান। তার মতামত উপেক্ষা করে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার কারণে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন বলে উপস্থিত লোকজনকে জানান রেজাউল। পরে রাতে তিন তালাকের বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন।
নাছিমা বিবি জানান, তিনি তালাকের বিষয়টি শুনেছেন। তবে এখনো কোনো কাগজ পাননি। তিনি বর্তমানে স্বামীর বাড়িতেই আছেন এবং সেখানেই থাকবেন। নির্বাচন থেকেও তিনি সরে দাঁড়াবেন না। জয়-পরাজয় ও ভোটের ব্যবধানই প্রমাণ করবে কোন স্ত্রী কেমন জনপ্রিয়।