পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, “কবিতা পড়ে, গান লিখে, ছবি এঁকে আমাদের পেট ভরবে না, সন্দেহাতীতভাবেই আমরা তা উপভোগ করবো। কিন্তু আমাদের কাজ করা, আউটপুট এবং প্রোডাকশনের কোনো বিকল্প নেই। দেশের উন্নয়নে আমাদের যতগুলো চ্যালেঞ্জ আছে তার মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সেটা হলো বাংলাদেশের ইকোনমিক ট্রান্সফরমেশন।”
শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের উদ্যোগে আয়োজিত ‘৫০ বছরে বাংলাদেশ—অর্জন, প্রত্যাশা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের শেষ দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, “আমি মনে করি গত ১০-১৫ বছরে আমরা অনেকটাই বিভ্রান্তি কাটিয়ে ট্র্যাকে এসেছি। আমরা দারিদ্র্যকে আক্রমণ করে কমিয়ে এনেছি। এ মুহূর্তে আমাদের প্রয়োজন সবার ঐক্যবদ্ধভাবে গুছিয়ে চলা। তাহলেই আমরা এ উন্নয়নের দিকে যেতে পারবো বলে আমি মনে করি।”
দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনের শেষ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এবং বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফারজানা সিদ্দিকা ও পলিটিক্যাল স্ট্যাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জহিরুল হকের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইলিয়াস উদ্দিন বিশ্বাস। অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন অনুষ্ঠানটির আহ্বায়ক অধ্যাপক দিলারা রহমান ও সার্বিক বিষয়ে বক্তব্য দেন সম্মেলনটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. জায়েদা শারমিন।
সম্মেলনে বাংলাদেশ, আমেরিকা, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, তুর্কি, ভারত, মঙ্গোলীয়া ও ডেনমার্কসহ ৮টি দেশের গবেষকদের শতাধিক গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়েছে। দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনে বাংলাদেশসহ ৮টি দেশের শতাধিক গবেষণাপত্র ১৪টি সশরীরে সেশনে এবং ২টি ভার্চুয়ালি সেশনে উপস্থাপিত হয়েছে।
গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি, আর্থ সামাজিক উন্নয়ন, সরকারি ও বেসরকারি খাতে সংস্কার, প্রযুক্তি ও উন্নয়ন, সংস্কৃতি বিনিময়, চ্যালেঞ্জ, ভাষা ও সাহিত্য, দক্ষিণ এশিয়া ও বাংলাদেশের ভূ-রাজনীতি, কোভিড-১৯, দরিদ্রতা, লিঙ্গ বৈষম্য, টেকসই উন্নয়ন, প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়ে গবেষকরা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়।
পরে বিকেলে সিলেটের একটি কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক মৎস্য সম্মেলনে যোগ দেন তিনি।
সেখানে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণভাবে ভারত, নেপাল, ভুটানসহ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে মিয়ানমার ইস্যু সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মিয়ানমারও আমাদের প্রতিবেশী, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখে একটা সমাধান বের হবে। তবে সবসময় ধৈর্য ধারণ করতে হবে, মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হবে।”
এম এ মান্নান আরও বলেন, “মিয়ানমার পরিস্থিতি প্রধানমন্ত্রী পর্যবেক্ষণ করছেন। সুতরাং এটা কোনো বিবাদের বিষয় নয়, এটা সমাধানের বিষয়।”
এ সময় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মতিয়ার রহমান রহমান হাওলাদার, ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার নীরাজ কুমার জয়সওয়াল উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে বাংলাদেশ ভারত, ডেনমার্ক, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, কোরিয়াসহ ১০টি দেশ থেকে ৩ শতাধিক গবেষক অংশ নিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।