যমুনা সার কারখানার প্রধান ফটক অবরোধ শ্রমিকদের

জামালপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২, ০৩:৪৯ পিএম

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার তারাকান্দিতে অবস্থিত দেশের বৃহৎ ও একমাত্র দানাদার ইউরিয়া উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনা সার কারখানার বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন।

৪৮৬ জন শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদ ও পুনর্নিয়োগের দাবিতে শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিক্ষোভ মিছিল শেষে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী কারখানার প্রধান ফটক অবরোধ করে প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়।

এ সময় কারখানার অবরুদ্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যাহ্ন বিরতিতে বের হতে আধা ঘণ্টা দেরি হয়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা চাকরি ফেরত না পেলে বৃহত্তর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কারখানা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

সমাবেশে শ্রমিকদের পক্ষে বক্তব্য দেন পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সামস উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আল মামুন, ডোয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল জলিল, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন রতন, মহাদান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, পোগলদিঘা মহাবিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যক্ষ মোয়াজ্জেম হোসেন, ট্রান্সপোর্ট সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন সরকার, কান্দারপাড়া বাজার সমিতির সভাপতি মাহবুবুর রহমান, পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের আহ্বায়ক আক্কাস উদ্দিন প্রমুখ।

জেএফসিএল সূত্র জানায়, বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প সংস্থার (বিসিআইসি) নিয়ন্ত্রাধীন কেপিআই-১ মানের যমুনা সার কারখানায় ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দৈনিক হাজিরাভিত্তিক শ্রমিক নিয়োগ করে। দরপত্র আহ্বান করে নির্বাচিত ঠিকাদারের মাধ্যমে দুই বছরের জন্য এসব শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়। সর্বশেষ সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের প্রতিনিধি সাখাওয়াত আলম মুকুলের মালিকানাধীন মেসার্স জান্নাত এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে ৪৮৬ জন শ্রমিক কর্মরত ছিলেন। তাদের মেয়াদকাল শেষ হয়ে যাওয়ায় ১ সেপ্টেম্বর থেকে সকল শ্রমিককে কারখানায় প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা দেয় কর্তৃপক্ষ।

এদিকে নতুন শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ রাখতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আদালতে মামলা করে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জানান, এমপির কথিত প্রতিনিধি (ঠিকাদার) নিজেদের স্বার্থে মামলা করে শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করেছে। এদিকে কারখানা কর্তৃপক্ষ দরপত্র আহ্বান না করে বিধিবহির্ভূতভাবে নিজেদের পছন্দ মতো লোক নিয়োগের পাঁয়তারা করছে। অথচ কর্মহীন শ্রমিকরা কাজ হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে।

ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিক জানান, শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি পূরণ না হওয়ায় ক্ষোভ বেড়েই চলছে। দ্রুত সমাধান না হলে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে।

এ ব্যাপারে কারখানার ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেন মুঠোফোনে জানান, চুক্তিভিত্তিক ৪৮৬ জন শ্রমিকের মধ্যে ১৯৩ জনের নিয়োগবিধি মোতাবেক আগেই বাতিল হয়েছে। বাকি ২৯৩ জনের মেয়াদকাল গত ৩১ আগস্ট শেষ হয়। নতুন ঠিকাদার নিযুক্ত করতে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু ঠিকাদারের মামলার কারণে নতুন শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ আছে।

সরিষাবাড়ী থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল মজিদ জানান, শান্তিপূর্ণভাবে শ্রমিকরা কর্মসূচি পালন করেছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।