‘পুলিশি হয়রানি’ বন্ধসহ পাঁচ দফা দাবিতে সিলেটে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট পালন করছেন পরিবহন শ্রমিকরা। মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে এ কর্মসূচি পালন করছে সিলেট সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ।
পূর্বঘোষিত এই কর্মসূচির কারণে কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে সিলেটের সড়ক যোগাযোগ। সিলেট থেকে ছেড়ে যায়নি দূরপাল্লার কোনো বাস, চলছে না সিএনজিচালিত অটোরিকশা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
কর্মসূচি ঘোষণার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে বৈঠকের জন্য সময় নির্ধারণ করা হলেও কর্মসূচি থেকে সরে আসেননি শ্রমিকরা।
এর আগে রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিলেটের ছয়টি রেজিস্টার্ড সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের এক সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়। এরপর সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে পরিবহন শ্রমিক নেতাদের ধর্মঘট প্রত্যাহারের অনুরোধ জানায় প্রশাসন। তবে সে অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে আজ ভোর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালনে নিজেদের অবস্থানে অটল থাকেন পরিবহন শ্রমিক নেতারা।
জানা গেছে, সিলেট বিভাগের সব পরিবহন শ্রমিক বেশ কিছুদিন ধরে পাঁচ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কর্মবিরতি পালনসহ মিছিল-সভা করে আসছেন। তাদের দাবিগুলো হলো সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) কমিশনার ও উপকমিশনারের (ট্রাফিক) অপসারণ, ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি ও রেকার বাণিজ্যসহ মাত্রাতিরিক্ত জরিমানা বন্ধ, সিলেটে শ্রম আদালতের প্রতিনিধি শ্রমিক লীগের নাম ব্যবহার করে প্রভাব বিস্তারকারী নাজমুল আলম রোমেনকে প্রত্যাহার, উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়া, ভাঙাচোরা রাস্তাগুলো দ্রুত সংস্কার এবং নতুন সিএনজিচালিত অটোরিকশা বিক্রি বন্ধ ও বিক্রয়কৃত গাড়ির রেজিস্ট্রেশন দেওয়া। এছাড়া অনুমোদনহীন গাড়ি যেমন অটোবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ডাম্পিংকৃত গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখার দাবি জানিয়ে আসছেন পরিবহন শ্রমিকরা।
দাবিগুলো যৌক্তিক দাবি করে সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আকবর রাজন বলেন, “আমাদের দাবিগুলো যেহেতু যৌক্তিক সেহেতু দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আমাদের ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে। বর্তমানে জেলা পর্যায়ে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হলেও পরে এই ধর্মঘটের পরিসর বাড়বে।”
এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের সমস্যার কথা বিবেচনা করে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হবে কি না জানতে চাইলে এই শ্রমিক নেতা বলেন, “দাবি না মানা পর্যন্ত ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হবে না। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতে সমস্যা সৃষ্টি করা হবে না। শিক্ষার্থী বহনকারী পরিবহন চলতে দেওয়া হবে।”