মজুত থাকলেও সিলিন্ডার গ‌্যাস বিক্রি করছেন না ডিলাররা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২, ০৯:২৮ এএম

কুড়িগ্রামে পাইকারী ও খুচরা পর্যায়ে এলপিজি গ‌্যাস বিক্রি বন্ধ রেখেছেন ডিলাররা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন গৃহস্থালী কাজে গ‌্যাস ব‌্যবহারকারীরা। লোকসানের অজুহাত তুলে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে গ‌্যাস বিক্রির দাবিতে গত শুক্রবার থেকে এলপিজি গ‌্যাস ডিলাররা ধর্মঘট পালন করছেন বলে একাধিক ডিলারের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

তবে জেলা প্রশাসন বলছে, গ‌্যাস ডিলারদের এমন দাবি অনৈতিক। কোনোভাবে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে গ‌্যাস বিক্রির সুযোগ নেই। এটা লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গের শামিল।

র‌োববার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার পর জেলা শহরের ত্রিমোহনী বাজারের কাছে ওমেরা গ‌্যাস ডিলার পয়েন্ট মেসার্স সাহা ফিলিং স্টেশনে মুকুল নামে একজন গ্রাহক গ‌্যাস কিনতে গেলে তার কাছে গ‌্যাস সিলিন্ডার বিক্রিতে অপারগতা জানায় ডিলারের প্রতিনিধি। এসময় তারা ওই গ্রাহককে জানান যে তাদের ধর্মঘট চলছে।

ওই গ্রাহক বলেন, “বাড়িতে গ‌্যাস শেষ। নতুন গ‌্যাস সিলিন্ডার নিতে এসে দেখি কেউ বিক্রি করছেন না। অথচ সব ডিলারের কাছে গ‌্যাস মজুদ আছে। সব ভোগান্তি আমাদের মতো গ্রাহকদেরকেই সহ‌্য করতে হবে কেন।”

ওমেরা গ‌্যাস ডিলারের প্রতিনিধি রুবেল জানান, সরকার নির্ধারিত মূল্যে গ‌্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করলে তাদের সিলিন্ডার প্রতি অন্তত ষাট টাকা লোকসান গুনতে হয়। আবার বেশি দামে গ‌্যাস বিক্রি করলে মোবাইল কোর্টে জরিমানা দিতে হয়। বিষয়টি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার তাদের একটি প্রতিনিধি দল জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করে বেশি দামে গ‌্যাস সিলিন্ডার বিক্রির অনুমতি চাইলে জেলা প্রশাসন থেকে সে অনুমতি দেওয়া হয়নি। ফলে তারা অনির্দিষ্টকালের জন‌্য গ‌্যাস বিক্রি বন্ধ রেখেছেন।

ডিলার রুবেল বলেন, “আমরাতো লোকসান করতে পারবে না। পাশের জেলাগুলোতে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে গ‌্যাস বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা বিক্রি করলে জরিমানা গুনতে হচ্ছে। এ জন‌্য আমরা বিক্রি বন্ধ রেখেছি। নতুন করে মাল তুলছিও না।”

কুড়িগ্রামে যমুনা গ‌্যাসের ডিলার বদরুল আহসান মামুন বলেন, “আমাদের উপায় নাই। আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে গিয়ে মূল‌্য সমন্বয় করে গ‌্যাস বিক্রির অনুমতি চেয়েছি। কিন্তু তিনি মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের বাইরে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে রাজি হননি। সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে আমাকে অন্তত পঞ্চাশ টাকা বেশি দিয়ে গ‌্যাস কিনতে হয়। সে হিসেবে আমাদের প্রতি সিলিন্ডার কমপক্ষে ১ হাজার ৩৯০ টাকায় বিক্রি করতে হয়। আমরাতো লোকসান করে বিক্রি করতে পারবে না। এজন‌্য নতুন করে মাল তুলছিও না, বিক্রিও করছি না।”

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, “ডিলাররা আমার কাছে এসেছিলেন। আমি বলেছি সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রির অনুমতি দেওয়ার সুযোগ নেই। এজন‌্য তারা যদি বিক্রি বন্ধ রাখেন সেটা কোনো সমাধান নয়। তারা সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার শর্তে লাইসেন্স নিয়েছেন।”

সংকটের প্রতিকার সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক বলেন, “এভাবে চলতে থাকলে আমাদের আইনগত ব‌্যবস্থা নিতে হবে। আমি প্রত‌্যাশা করবে তারা (ডিলাররা) নির্ধারিত মূল্যে গ‌্যাস বিক্রি করবেন।”