দক্ষিণ বাংলার অক্সফোর্ডখ্যাত ঐতিহ্যবাহী সরকারি বরিশাল বিএম (ব্রজমোহন) কলেজের ছাত্রদের থাকার জন্য হোস্টেল ভবনগুলো যেন এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। হোস্টেল সংস্কারে কর্তৃপক্ষের অনীহা এবং ভবনের অবস্থা এতটাই খারাপ যে সর্বদাই আতঙ্ক লাগে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কলেজের অভ্যন্তরে দক্ষিণ পার্শ্বে অবস্থিত অনেক বছর আগে নির্মিত ছাত্রদের থাকার জন্য দুটি ভবন। যার নাম দেওয়া হয়েছে ডিগ্রি হোস্টেল। এ হোস্টেলে যুগ যুগ ধরে ছাত্ররা থেকে খেয়ে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করেছেন। বহু রাজনীতিবিদও এখানে থেকে লেখাপড়া করেছেন। এ রকম ঐতিহ্যবাহী একটি হোস্টেল ভবনে বসবাসরত ছাত্রদের যেন এখন দুর্ভোগের শেষ নেই। কম খরচে হোস্টেলে থেকে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা নিতেই বহু ছাত্রের বসবাস এই হোস্টেলে। বার্ষিক ৪ হাজার ৫০০ টাকা করে রুম ভাড়া দিয়ে প্রতি রুমে চারজন থাকতে হয়। এই হোস্টেলে প্রায় ৪০০ ছাত্র বসবাস করছে বলে জানা যায়। ছাত্রদের দুর্ভোগের অন্যতম কারণ ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, স্যাঁতসেঁতে রুমের পরিবেশ, হোস্টেল ভবনের অনেক জায়গায় ছাদের পলেস্তারার ক্ষয়, রুমের পলেস্তারা ভেঙে পড়েছে, যা নিয়ে প্রতিনিয়ত আতঙ্কে থাকতে হয় তাদের। এছাড়া গোসলখানা বাথরুমের অবস্থাও খুব করুন।
হোস্টেলে বসবাসরত কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, “দূরদূরান্ত থেকে বিএম কলেজে পড়তে এসেছি। বাইরে থাকতে গেলে অনেক খরচ, তাই খরচ কমাতে কষ্ট হলেও বিএম কলেজের হোস্টেলে থাকছি। কিন্তু বর্তমানে হোস্টেলের অবস্থা এতটাই খারাপ যে সর্বদাই আতঙ্কে থাকা লাগে এই বুঝি ভবনের ছাদ ভেঙে মাথার ওপরে পড়ল। কলেজের অভ্যন্তরে অনেক দৃষ্টিনন্দন ভবন থাকলেও ছাত্রদের থাকার ভবনের সংস্কার ও নতুন ভবন নির্মাণে কেন কর্তৃপক্ষের অনীহা সেটা আমরা জানি না। আমরা চাই দ্রুত ছাত্রদের থাকার জন্য নতুন ভবন নির্মাণ করা হোক।”
এ বিষয়ে কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন সরোয়ার বলেন, “ছাত্র হোস্টেলের ভবনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে, যা মেরামত করলেও কোনো কাজে আসবে না, তবে শিক্ষা প্রকৌশলী বরাবর নতুন ভবনের জন্য আবেদন করা হয়েছে নতুন ভবন তৈরি হলে সংকট কেটে যাবে।”
কলেজের অধ্যক্ষ ড. গোলাম কিবরিয়া বলেন, “আমরা শিক্ষা প্রকৌশলীর কাছে ছাত্রদের থাকার জন্য পুরাতন ভবন সংস্কার এবং নতুন ভবন নির্মাণের জন্য আবেদন করেছি, খুব শিগগির বিষয়টির সমাধান হবে।”