লালমনিরহাটে চার সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার মূল আসামি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে সাহেদ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার সদর থানায় চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২১ জনের বিরুদ্ধে ওই মামলা দায়ের করেন যমুনা টেলিভিশনের সাংবাদিক আনিছুর রহমান লাডলা।
এর আগে শুক্রবার (১২ আগস্ট) বিকেলে হামলার শিকার হন যমুনা টিভির লালমনিরহাট প্রতিনিধি আনিছুর রহমান লাডলা ও ক্যামেরা পারসন আহসান হাবিব, প্রথম আলোর লালমনিরহাট প্রতিনিধি আব্দুর রব সুজন, এখন টিভির মাহফুজুল ইসলাম বকুল।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজার রহমান মণ্ডলের ছোট ছেলে ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি সুলতান মণ্ডল (৩৮) প্রতিবেশী এক গৃহবধূর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। কয়েকদিন আগে সেই গৃহবধূকে নিয়ে নিরুদ্দেশ হন সুলতান। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর পরিবার থানায় অভিযোগ দায়ের করে।
এ ঘটনার তথ্য সংগ্রহে শুক্রবার বিকেলে ঘটনাস্থলে যান তিন সাংবাদিক। তাদের সঙ্গে ছিলেন ক্যামেরা পারসন আহসান হাবিব। তথ্য সংগ্রহ শেষে ফেরার পথে হঠাৎ তাদের পথরোধ করেন আওয়ামী লীগ নেতা আজিজার রহমান, তার বড় ছেলে সাহেদ ও আরও কয়েকজন। এ সময় হাবিবের হাতে থাকা ক্যামেরা নিয়ে ভাঙচুর করেন সাহেদ। পরে ক্যামেরার ট্রাইপড দিয়ে প্রথম আলো, যমুনা ও এখন টিভি সাংবাদিকদের এলোপাতাড়ি মারধর করতে শুরু করেন।
ঘটনার পর আহত সাংবাদিকদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয়রা। পরে শনিবার ভোরে আহত সাংবাদিক আনিছুর রহমান লাডলা পঞ্চগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজার রহমান, তার ছেলে সাহেদ ও তার বাকি দুই ভাইয়ের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত করা হয় অজ্ঞাতনামা আরও ২১ জনকে। থানা পুলিশ মামলা পরবর্তীতে অভিযোগটিকে মামলা হিসেবে নিয়ে নথিভুক্ত করে।
এ ব্যাপারে সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। মামলা নথিভুক্ত করে প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
এদিকে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা। জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার দাবি করেছেন তারা। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে জেলা শহরে ও কালিগঞ্জ উপজেলায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছে সাংবাদিকরা।