সিলেটে রেকর্ড গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন

সিলেট প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২২, ০৬:৪৮ পিএম
ফাইল ফটো

আষাঢ়ের শেষ দিন শুক্রবার (১৫ জুলাই)। কিন্তু আবহাওয়া মনে করিয়ে দিচ্ছে চৈত্রকে। প্রচণ্ড দাবদাহে অতিষ্ঠ সিলেটবাসী। তাপমাত্রা উঠেছে ৩৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা জুলাই মাসে গত ৬৬ বছরের রেকর্ড।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানিয়েছেন, ১৯৫৬ সালের পর বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) সিলেটে তাপমাত্রা ৩৮.৯ ডিগ্রিতে পৌঁছায়।

নগরীর শাহী ঈদগাহ, কাজীটুলা ও আম্বরখানা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শুক্রবার সকাল থেকে সিলেটে কড়া রোদ ছিল। রোদে বাইরে থাকা শ্রমজীবী মানুষের চরম দুর্ভোগে দিন পার করছে। শরীর দিয়ে ঘাম ঝরছে। শিশু, মধ্যবয়স্ক, বৃদ্ধ সবাই তৃষ্ণার্ত। অনেকে ডাবের দোকানে ভিড় করে ডাব কিনছেন। কমবেশি সবার হাতে ঠান্ডা পানির বোতল দেখা গেছে।

এই রেকর্ড তাপমাত্রায় হাঁসফাঁস দশায় পড়েছেন মানুষ। নগর ছাড়িয়ে গ্রাম, সর্বত্র গরমের তীব্রতায় ভুগছে মানুষ। দিনে-রাতে সমানতালে চলছে গরমের দাপট। এর মধ্যে কষ্টের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে লোডশেডিং।

ব্যাপক গরমে বিপাকে পড়েছেন রিকশাচালক, ভ্যানচালক, দিনমজুর, হকারসহ কর্মজীবীরা।

নগরীর আম্বরখানা এলাকায় এক বৃদ্ধ রিকশাচালক বলেন, “এই গরমে রিকশা টানা যায় না। নিরুপায় হয়ে রিকশা চালাতে হচ্ছে।”

এদিকে অস্বাভাবিক তাপদাহের কারণে জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগ, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগব্যাধির দেখা দিচ্ছে। এতে হাসপাতাল-ক্লিনিক, ডাক্তারের চেম্বারে বাড়ছে রোগীর ভিড়।

তীব্র গরমে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। তাই দিনের বেলা ছাতাসহ বাইরে বের হওয়া এবং প্রচুর পরিমাণ পানি ও ফলমূল খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে ক’দিন ধরে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই তাপপ্রবাহের কারণেই এমন গরম অনুভূত হচ্ছে। বৃষ্টির অপেক্ষা আরও দুই-একদিন করতে হতে পারে। চলমান তাপপ্রবাহ থাকতে পারে আরও দুই-তিনদিন।

আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির বলেন, “১৬-১৭ জুলাই পর্যন্ত পরিস্থিতি এমনই থাকতে পারে। মাঝে মাঝে কোথাও হালকা বৃষ্টি হলেও গরম খুব একটা কমবে না। গরম কমতে হলে টানা বৃষ্টি হতে হবে। ১৭ বা ১৮ জুলাইয়ের পর বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা বাড়তে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “তাপমাত্রা এখন গড়ে ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে আছে। মৌসুমি বায়ুর কারণে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি। গরমে ঘেমে গেলেও ঘাম শুকাচ্ছে না। ফলে ভ্যাপসা একটা ভাব তৈরি হচ্ছে। এ কারণে যতটুকু তাপমাত্রা বেড়েছে তার চেয়ে বেশি তাপ অনুভূত হচ্ছে।”