পৌরসভার সংস্কার ও উন্নয়ন কাজের গরিমসি ও ধীরগতিতে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের প্রধান সড়ক গত ছয় মাস ধরে বন্ধ। এতে রোগী পরিবহন ও স্থানীয়দের দুর্ভোগের কমতি নেই। বিকল্প সড়কটি ঝুঁকিপূর্ণ ও ভাঙা হওয়ায় চলাচলে ঘটছে দুর্ঘটনা। কাজটি দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়েছে স্থানীয় লোকজন ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
অপরদিকে, গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির কাজ জুলাই মাসের মধ্যে শেষ করতে ঠিকাদারকে নোটিশ দেওয়া কথা বলছেন পৌর মেয়র।
খাগড়াছড়ি পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগের তথ্যমতে, ২০২১-২২ অর্থবছরের আইইউডিপি প্রকল্পের আওতায় ৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে থানা মোড় থেকে মধুপুর বাজার পর্যন্ত সড়ক সংস্কার, ড্রেন নির্মাণ ও ফুটপাত তৈরির কাজ হাতে নেওয়া হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে গেল অক্টোবরে কাজের কার্যাদেশ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে প্রকল্পের বরাদ্দ কম থাকায় কাজ শুরু করতে দেরি হয়ে যায়।
এ বিষয়ে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতাল সড়কের টিঅ্যান্টটি গেইট, হাসপাতাল গেইট ও হাসপাতাল প্রাঙ্গণে কয়েক জনের সঙ্গে কথা হয়।
টিঅ্যান্টটি গেইট এলাকার বাসিন্দা নার্গিস আক্তার বলেন, “রমজান থেকে সড়কটির কাজ শুরু করায় থানা মোড়ের সামনে থেকে সড়কে যান চলাচল বন্ধ করা হয়। তার কিছুদিন পর ড্রেনের কাজের নামে সড়কে গর্ত করা হয়। হেঁটে বাড়ি আসার পথে গর্তে পড়ে নাকে ব্যথা পেয়েছি। যার ক্ষত এখনো আছে।”
হাসপাতালে রোগী নিয়ে আসা এক স্বজন জানান, দীঘিনালার মেরুং থেকে রোগী নিয়ে খাগড়াছড়ি আসার পথে ভুলে আগের সড়কে ঢুকে যান। কিছু দূর আসার পর দেখেন সড়কে বড় গর্ত। পরে ফিরে এসে থানা মোড়ে দাড়িঁয়ে অনেকক্ষণ পর বিকল্প সড়ক খুঁজে হাসপাতালে যায়। এতে প্রায় এক ঘণ্টা সময় চলে যায়।
অটো রিকশা চালক মহরম মিয়া জানান, বিকল্প সড়কে আসতে সময় যাচ্ছে। ভাঙা ও টিলা রাস্তা হওয়ায় কষ্টও হচ্ছে। তারপর যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে নানা কথা শুনতে হচ্ছে।
বিমলা ত্রিপুরা নামে এক রোগীর স্বজন জানান, তিন দিন ধরে খাগড়াপুরের বাড়ি থেকে আসা যাওয়া করছেন। আগে যেখানে ৩০ টাকায় আসা যাওয়া করা যেত সেখানে এখন ৫০ টাকা লাগছে।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রিপল বাপ্পী চাকমা বলেন, “কোনো প্রকার অগ্রিম নোটিশ ছাড়া হাসপাতালের সড়ক বন্ধ করেছে পৌরসভা। বিকল্প সড়কটি ব্যবহার করে রোগীদের হাসপাতালে আসতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত সড়কটি সংস্কার করে চালুর দাবি জানাচ্ছি।”
খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী বলেন, “ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে কাজটি শেষ করে চলাচল উপযোগী করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টি ও অর্থ বরাদ্দ পেতে কাজ শুরু করতে বিলম্ব হচ্ছে। সাময়িক এ সুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।”