কিশোরগঞ্জের ভৈরবের ইউনাইটেড হাসপাতালে নার্স রিমা প্রামাণিকের (১৮) রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হানিফুর রহমান সুমনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১২ জুলাই) ভোরে হানিফুর রহমানকে আটক করা হয়। পরে তাকে দুপুরে দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
রিমা প্রামাণিকের মৃত্যুর ঘটনায় নিহতের বাবা সেন্টু প্রামাণিক বাদী হয়ে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হানিফুর রহমান সুমন (৪০), নার্স লিজাসহ (২৪) অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪জনকে অভিযুক্ত করে মামলাটি করেন।
এর আগে সোমবার (১১ জুলাই) সকালে ভৈরব শহরের কমলপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে রিমা প্রামাণিকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রিমা নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের পিরিজকান্দি গ্রামের সেন্টু প্রামাণিকের মেয়ে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার ২০৩ নম্বর স্টাফ আবাসিক কক্ষে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না জড়িয়ে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেন রিমা। মৃত্যুর আগে রিমা একটি চিরকুটে ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়’—এই কথা লিখে গেছেন বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
নিহত নার্স রিমার বাবা সেন্টু প্রামাণিক বলেন, “রিমা ছুটিতে বাড়িতে ছিলো। শনিবার বিকেলে হাসপাতালের এমডি হানিফুর রহমান সুমন আমার মেয়েকে ফোন করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সোমবার সকালে হাসপাতাল থেকে রিমার মৃত্যুর সংবাদ জানানো হয়। আমরা হাসপাতালে এসে আমার মেয়ের লাশ একটি কক্ষে শোয়ানো অবস্থায় দেখতে পাই। যদি মেয়ে আমার আত্মহত্যাই করে থাকে, তবে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে কেন নামানো হলো? এ ছাড়া আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে এমন কী ঘটনা ঘটলো?”
সেন্টু প্রামাণিক আরও বলেন, “পুলিশের সুরতহাল রিপোর্টে রিমার যৌনাঙ্গে রক্তের দাগ রয়েছে। আমার মেয়েকে ধর্ষণের পর গলাটিপে হত্যা করা হয়েছে।”
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম মোস্তফা জানান, ঘটনাটি আত্মহত্যা না হত্যা, তা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর বলা যাবে। নিহতের বাবা আজ থানায় দুজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। সেই মামলায় হাসপাতালের এমডি সুমনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।