যৌতুকের দাবি পূরণ না করায় শেরপুরের শ্রীবরদীতে বোরকা পরে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে দা দিয়ে কুপিয়ে স্ত্রীসহ তিনজনকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত মিন্টু মিয়াকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২৪ জুন) ভোরে উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের পুটল গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে পুটল গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে ঢুকে কুপিয়ে স্ত্রী-শাশুড়িসহ তিনজনকে কুপিয়ে হত্যা করেন মিন্টু মিয়া। এ সময় আহত হন আরও তিনজন।
নিহতরা হলেন মিন্টু মিয়ার স্ত্রী মনিরা বেগম (৩০), শাশুড়ি শেফালী বেগম (৫০) ও জ্যাঠাশ্বশুর মাহামুদ (৬৫)।
আহতরা হলেন মিন্টু মিয়ার শ্বশুর মনু মিয়া, শ্যালক শাহাদাৎ হোসেন ও জ্যাঠাশাশুড়ি সাহেরা বেগম।
শ্রীবরদী থানার ওসি (তদন্ত) আবু সাইম জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ভোররাতে ঘাতক মিন্টুকে পুটল গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মিন্টু মিয়া পাশের গেরামারা গ্রামের হাই উদ্দিনের ছেলে।
নিহতদের স্বজন ও এলাকাবাসী জানায়, এক যুগ আগে মনিরার সঙ্গে পাশের গেরামারা গ্রামের মিন্টু মিয়ার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় মিন্টুকে দেড় লাখ টাকা যৌতুক দেন শ্বশুর মনু মিয়া। একসময় আরও যৌতুক চেয়ে মনিরাকে মাঝেমধ্যে মারধর করতেন মিন্টু। এ বিষয়টি মীমাংসার জন্য কয়েকবার গ্রাম্য সালিস বৈঠক হয়। একপর্যায়ে মিন্টুর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাবার বাড়ি ফিরে আসেন মনিরা।
এ ঘটনায় উত্তেজিত হয়ে মিন্টু বৃহস্পতিবার রাতে বোরকা পরে ধারালো দা নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে অতর্কিত হামলা করে স্ত্রী মনিরা বেগমকে কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় বাধা দিতে গেলে শাশুড়ি শেফালী খাতুন, শ্বশুর মনু মিয়া, জ্যাঠাশ্বশুর মাহমুদ, শ্যালক শাহাদৎ হোসেন ও জ্যাঠাশাশুড়ি সালেহা বেগমকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন।
পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে পাশের বকশিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে শেফালী বেগম ও মাহমুদকে মৃত ঘোষণা করেন দায়িত্বরত চিকিৎসক।
অন্যদিকে ওই দিন রাতেই উন্নত চিকিৎসার আহত মনু মিয়া, শাহাদৎ হোসেন ও সালেহা বেগমকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, “এ ঘটনায় নিহতদের মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”