কক্সবাজারের টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ছোট হাবিবপাড়া গ্রাম। কয়েক দিন আগে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে ওই গ্রাম। এদিকে পুরুষশূন্য হওয়ার সুযোগে দোকান ও বাড়িঘরে লুটপাট ও ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। এ ঘটনায় গত শনিবার (০৭ আগস্ট) পর্যন্ত নারীসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গত বুধবার মাদক মামলার আসামি ছোট হাবিবপাড়ার মো. হাবিবুর রহমান হাবিব ওরফে মগুকে গ্রেপ্তারের পর হামলা চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নেন স্বজনরা। এ সময় তিন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। এ ঘটনায় ৪৪ জনকে আসামি করে মামলা করে পুলিশ।
স্থানীয়রা জানায়, ছোট হাবিবপাড়া গ্রামে পাঁচ শতাধিক পরিবারের বসবাস। গত বুধবার আসামি ছিনতাইয়ের পর গ্রামে অভিযান চালায় পুলিশ। এরপর থেকে ঘটনায় জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে দফায় দফায়। এ অবস্থায় গ্রামের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। ঘটনায় জড়িত অনেকেই আত্মগোপনে চলে গেছে। আবার ঘটনায় জড়িত নন, এমন অনেকেই গ্রেপ্তার আতঙ্কে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন। এই সুযোগে দোকান ও বাড়িঘর লুটপাট করা হয়েছে।
গ্রামের বাসিন্দা ফাতিমা খাতুন বলেন, “আমার স্বামী তিন মাস আগে সৌদি আরব থেকে দেশে আসেন। শুক্রবার বিকালে হঠাৎ করে পুলিশ এসে স্বামীকে ধরে নিয়ে যায়। তার কী অপরাধ কিছুই বলেনি। ঘরে তালা দিয়ে স্বামীকে ছাড়িয়ে আনতে পাসপোর্ট ও বিমানের টিকিটসহ কাগজপত্র নিয়ে থানায় যাই। সারাদিন চেষ্টার পরও স্বামীকে ছাড়াতে পারলাম না। রাত হয়ে যাওয়ায় আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলাম। শনিবার সকালে বাড়ি এসে দেখি ঘরের দরজা ভেঙে আলমারিতে থাকা আট ভরি স্বর্ণ ও ৯০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।”
একই গ্রামের বাসিন্দা নুর বেগম বলেন, “আসামির খোঁজে প্রতি রাতে বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। ভয়ে পুরুষরা বাড়িতে থাকছে না। পুরো গ্রাম পুরুষশূন্য। আমরা চাই অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হোক। তবে নিরপরাধ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়।”
স্থানীয় দোকানি মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, “কে বা কারা রাতে আমার দোকানের সব মালামাল ও নগদ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। তবে এমন চুরির ঘটনা এখানে এর আগে ঘটেনি।”
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, “ঘটনায় জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে। নিরপরাধ কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না। দোকান ও বসতঘরে লুটপাটের বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবো।”