এশার নামাজের পর গত শনিবার রাতে ছেলের সঙ্গে সামান্য কথা হয় রবিউলের (রবি) মা ফাইমা বেগমের। ছেলে ব্যস্ত থাকায় পরে ফোন দিতে বলে। আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে আর ছেলেকে ফোন দিতে পারেনি। বারবার ছেলের কথা মনে করে এমন বিলাপ করে চোখের পানি ফেলছেন ফাইমা বেগম।
রবিউলের মা ফাইমা বেগম বলেন, “রোববার (৫ জুন) ভোর ৫টার দিকে ছেলেকে কল দিলে অফিসে যিনি ডিউটিতে ছিলেন তিনি রিসিভ করে বলেন, ‘রবিউল ডিউটিতে গেছে। তার জন্য দোয়া করেন।’”
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ দেখে রোববার রবির নিখোঁজের খবর পায় পরিবার। তারপর থেকেই তারা ছেলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন। কোথাও কোনো খোঁজ মিলছে না রবির। এত ভেঙে পড়েছে পরিবারের সবাই। বিএম কনটেইনার ডিপোতে শনিবার রাত ৯টার দিকে আগুন লেগে নিখোঁজ হয়েছেন নওগাঁর চকপাথুরিয়া গ্রামের রবিউল ইসলাম।
রবিউলরা দুই বোন এক ভাই। ছোট ভাই রনি এবং প্রথম শ্রেণিতে পড়া সাত বছর বয়সী ছোট বোন রিমঝিম। বড় ছেলের খোঁজে ছোট ছেলে রনিকে নিয়ে রোববার সকাল ৯টার দিকে রওনা দেন বাবা খাদেমুল ইসলাম। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে পৌঁছান রাত সাড়ে ১০টার দিকে।
মুঠোফোনে রবিউলের বাবা বলেন, “সীতাকুণ্ড ফায়ার স্টেশনের কর্মকর্তারা বলেছেন, তাদের অনেক সহকর্মী মারা গেছেন। আবার অনেকে গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনন্সিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। এখনও আমার ছেলের লাশ শনাক্ত করা যায়নি। সোমবার (৬ জুন) সকালে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য স্যাম্পল দিয়েছি হাসপাতালে।”
বিএম কনটেইনার ডিপোতে শনিবার রাত ৯টার দিকে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিস খবর পায় ৯টা ২৫ মিনিটে। রাত ১১টার দিকে শুরু হয় বিস্ফোরণ। কনটেইনারে থাকা হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের বিস্ফোরণে আগুন দ্রুত আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। বিস্ফোরণের শব্দে ভেঙে যায় আশপাশের বাড়িঘরের জানালার কাঁচ।