আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, “বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম প্রতিদিন হ্যালুসিনেশনের মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরে ঝাঁপ দিয়ে দিয়ে শ্রীলঙ্কা যাচ্ছেন, আর বাংলাদেশকে জড়িয়ে কল্পনাপ্রসুত নানা কথা বলেন।”
শনিবার (১৪ মে) মাগুরা শহরের নোমানী ময়দানে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি সংযুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “তবে বাস্তবতা হচ্ছে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের এমন শিখরে পৌঁছেছে, যে উত্তোরত্তর উন্নয়ন ছাড়া আগামীতে আমরা কোনো দিক দিয়েই পিছিয়ে থাকব না। আমাদের অর্থনীতি তার নিজস্ব স্বকীয়তায় অনেক মজবুত। এটিকে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করা হাস্যকর।”
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, “যারা নিজেদের ঘরের ঐক্য ধরে রাখতে পারে না তারা দলের পক্ষে জনগণের ঐক্য কীভাবে আশা করে। তারা তাদের দলীয় চেয়ারপারসনকে মুক্ত করতে একটা সমাবেশ পর্যন্ত করতে পারেনি। অন্যের সমালোচনা তাদের মুখে শোভা পায় না।”
পদ্মা সেতুর বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আগামী মাসে পদ্মা সেতু উদ্বোধন হবে। এটি দেশের যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় সুখবর। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু টানেল, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজও শেষ পর্যায়ে, যে কারণে ফখরুল সাহেবদের মাথা খারাপ অবস্থা হয়েছে।”
সেতুমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ লোনগ্রস্ত দেশ নয়, বরং অন্য দেশকে লোন দিয়ে থাকে। শ্রীলংকাকে ২০০০ কোটি টাকা লোন দিয়েছে বাংলাদেশ।”
জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আ ফ ম আব্দুল ফাত্তাহর সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম। প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল।
বক্তব্য রাখেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাইফ্জ্জুামান শিখর, মাগুরা-২ আসনের সংসদ সদস্য ড. বীরেন শিকদার প্রমুখ। নতুন কমিটি গঠন বিষয়ক দ্বিতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে শহরের শেখ কামাল ইনডোর স্টেডিয়ামে।
জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০১৫ সালের ৮ মার্চ। সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ডাক্তার সিরাজুল আকবরকে সভাপতি ও পঙ্কজ কুমার কুন্ডু সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হন। ৯ মার্চ নবনির্বাচিত সভাপতি প্রফেসর আকবর মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তীতে জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা তানজেল হোসেন খানকে কেন্দ্র থেকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি তানজেল হোসেন খানের মৃত্যু হলে সভাপতি পদটি আবারও শূন্য হয়। পরবর্তীতে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আ ফ ম আব্দুল ফাত্তাহকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই থেকে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আব্দুল ফাত্তাহ ও পঙ্কজ কুন্ডু।
এবারের সম্মেলনে বর্তমান কমিটির প্রবীণ এই দুই নেতাকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে বহাল রেখেই নতুন কমিটি হতে পারে এমন কথা যেমন নেতাকর্মীদের মুখে মুখে রয়েছে। তেমনি প্রবীণদের মধ্যে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ কুন্ডু বা জ্যেষ্ঠ কাউকে সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে মেধা ও রাজনৈতিক যোগ্যতার ভিত্তিতে নতুন কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে এমন কথা শোনা যাচ্ছে সমানভাবে।
সেখানে ত্যাগী আওয়ামী লীগ নেতাদের পরিবারের সদস্যরা দায়িত্ব পেতে পারেন বলে জানা গেছে।