ঈদকে সামনে প্রতিবছর সুন্দরবনে হরিণ শিকারী চক্রগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে। বন সংলগ্ন বিভিন্ন পয়েন্টে শুরু হয় হরিণের মাংসের রমরমা বাণিজ্য। এ ছাড়া অন্যান্য বন অপরাধীরা ও নানা সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করে। ঈদকে সামনে রেখে বন অপরাধীদের এসব অপতৎপরতা প্রতিরোধ করতে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের টহল কার্যক্রম জোরদার করার নির্দেশনা দিয়ে বিশেষ সতর্ক বার্তা জারি করা হয়েছে। সকল বনরক্ষীদের ঈদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কচিখালী ফরেস্ট অভয়ারণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, “আমাদের ঈদের ছুটি বাতিল করে হরিণ শিকার ও পাচাররোধে টহল জোরদারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নির্দেশনা দিয়েছেন।”
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, “বন বিভাগের ঈদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।”
হরিণসহ বনজ সম্পদ পাচাররোধে পূর্ব বন বিভাগের সকল রেঞ্জ, স্টেশন ও টহল ফাঁড়িকে সার্বক্ষণিক টহল জোরদারের নির্দেশনা দিয়ে অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সুন্দরবন সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির কোষাধ্যক্ষ ফরিদ খান মিন্টু বলেন, “প্রতি বছর ঈদের আগে ও পরে হরিণের মাংসের বিশেষ চাহিদা দেখা যায়। ঈদের ছুটিতে দূর থেকে আসা অতিথি আপ্যায়নের জন্য এক এক শ্রেণীর মানুষ হরিণের মাংসের প্রতি বিশেষ দুর্বলতা দেখায়। অপরদিকে, ঈদের ছুটিতে অধিক সংখ্যক বনরক্ষী বাড়িতে যাওয়ায় শিকারীরা সে সুযোগ কাজে লাগাতে মরিয়া হয়ে ওঠে। যার কারণে প্রতিবছর ঈদের পূর্ব ও পরবর্তী সময় সুন্দরবনে বেশ কিছু হরিণ মারা পড়ে। এছাড়া কাঠ পাচার ও বনের আভ্যন্তরীণ নদী ও খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার প্রবণতাও বেড়ে যায়।
এ প্রেক্ষিতে বন বিভাগের এ বিশেষ সতর্কতা ও বনরক্ষীদের ছুটি বাতিলের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটিসহ বন রক্ষার কাজে নিয়োজিত সংগঠনগুলো।
অতি সম্প্রতি শরণখোলার সোনাতলা গ্রাম থেকে পর পর দুইটি হরিণের চামড়া উদ্ধার, সুন্দরবনের দুবলারচরের নীলবাড়ীয়া থেকে শিকারীদের কবল থেকে একটি ট্রলারসহ হরিণের মাংস জব্দ এবং উপজেলার মঠেরপাড় এলাকা থেকে হরিণের মাংসসহ একজনকে আটক করে বনরক্ষীরা।