৩ চাকার যান বন্ধ ঘোষণা করায় বিপাকে আশুগঞ্জ-ভৈরববাসী

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ১৭, ২০২২, ০৯:১২ পিএম

যোগাযোগের অন্যতম নগরী হিসেবে পরিচিত নদীবন্দর ভৈরব প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য প্রসিদ্ধ স্থান। বর্তমানে মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন সরকার বন্ধ ঘোষণা করায় বিপাকে পড়েছেন আশুগঞ্জ-ভৈরববাসী।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ও পথচারীরা জানান, ভৈরব-আশুগঞ্জের দূরত্ব মাত্র দেড় কিলোমিটার। মেঘনা নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি পাড় হওয়ার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাসের জন্য বসে থাকতে হয়। আবার দূরত্ব কম হওয়ায় মহাসড়কে চলাচলকারী দূরপাল্লার বাসে যাত্রী উঠতে পারে না। বাধ্য হয়েই বিআরটিসি বাস ও মোটরসাইকেলে সেতু পার হতে হয়। তাছাড়া নারী, শিশু ও বৃদ্ধ মানুষজন মোটরসাইকেলেও উঠতে পারে না। আবার মোটরসাইকেলে সেতু পার হতে গিয়ে বিভিন্ন সময় হয়রানির শিকারও হতে হচ্ছে যাত্রীদের। ভৈরব বাজারে পণ্য আনা নেওয়ার ক্ষেত্রেও ভোগান্তিতে পড়তে হয় ব্যবসায়ীদের। তাই ভৈরব বাজারমুখী ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা সংখ্যা দিনদিন কমে যাচ্ছে। যার ফলে, ভৈরব বাজার ব্যবসায়ীরা ক্রেতার অভাবে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাদের দাবি তিন চাকার সিএনজিরচালিত অটোরিকশার বিকল্প হিসেবে যদি লেগুনা সার্ভিস চালু করা হয় তাহলে সাধারণ পথচারী, ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগ কমে যাবে। এই লেগুনা সার্ভিস চালু হলে অতিরিক্ত অর্থ ও সময় দুটোই বাঁচবে বলে তাদের দাবি।

আশুগঞ্জ মানবিক সংগঠনের সভাপতি মো. আলাউদ্দিন আহমেদ জানান, আশুগঞ্জসহ অত্র এলাকার হাজার হাজার মানুষজন প্রতিদিন প্রয়োজনীয় কাজে ভৈরব বাজার, হাসপাতাল ও কলেজে যাতায়াত করে থাকেন। ব্যবসায়ী, রোগী ও শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ভৈরবে আসা যাওয়ায় ক্ষেত্রে সহজ পরিবহন না থাকায় সেতু পারাপারে নানান ভোগান্তি পোহাতে হয়। ভৈরব-আশুগঞ্জে বিআরটিসি বাসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকে দেড় কিলোমিটার সেতু পাড় হতে হয়। এছাড়াও মোটরসাইকেল রাইডে নারী, শিশু ও বয়স্কদের পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। তাই সিএনজি চালিত অটোরিকশা বন্ধ থাকায় বিকল্প পরিবহন চালু হলে সেতু পারাপারে যাত্রীদের ভোগান্তি অনেকটা কমে যাবে।

ভৈরব বিআরটিসি বাস সার্ভিসের দায়িত্বে থাকা আল আমিন জানান, মহাসড়কে সিএনজি বন্ধ থাকার পর থেকে ভৈরব-আশুগঞ্জে বিআরটিসি বাস চালু হয়। মোটরসাইকেল সার্ভিস থাকায় বাসে যাত্রী কম হয়। যাত্রী কম হওয়ার প্রতিদিন লোকসান গুণতে হচ্ছে এবং বিলম্বে বাস ছাড়তে হয়।

দেড় কিলোমিটার সড়ক পাড় হতে যাত্রীদের কাছ থেকে ২০টাকা অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে আল আমিন বলেন, “সরকারি আইনে কিলোমিটার প্রতি আড়াই টাকা ভাড়ার নিয়ম থাকলেও না পোষার কারণে অতিরিক্ত ভাড়া নিতে হয়।”

এ বিষয়ে ভৈরব পৌরসভার মেয়র আলহাজ ইফতেখার হোসেন বেনু বলেন, “ভৈরব বাজার একটি ব্যবসায়ীক এলাকা। গত কয়েক বছর ধরে শুধুমাত্র ছোট ও সহজ যানবাহন না থাকার কারণে ভৈরব বাজারের ব্যবসা বাণিজ্য চরমভাবে ক্ষতি হচ্ছে। সরকারের নির্দেশনায় মহাসড়কে সিএনজি চালিত অটোরিকশা বন্ধ থাকায় বিকল্প হিসেবে ছোট যানবাহন চালু করা গেলে ভৈরব বাজার ব্যবসা আগের মতো প্রাণ ফিরে পাবে।”