গ্রাম ছেড়ে ঢাকার কর্মস্থলে ছুটছে শ্রমিকরা

জামালপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০২১, ০৪:১০ পিএম

আগামী ১ আগষ্ট রোববার থেকে পোশাক কারখানাসহ সব শিল্পকারখানা খুলে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এই ঘোষণা পর থেকে গ্রাম থেকে ঢাকার মুখে ছুটছে মানুষ।

শনিবার (৩১ জুলাই) ভোর থেকেই জামালপুর জেলা সদরসহ সরিষিবাড়ি, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ, ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জ উপজেলা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করেছে সাধারণ মানুষ। এছাড়াও বগুড়ার সারিয়াকান্দি, কুড়িগ্রামের রৌমারী-রাজিবপুর, মাদারগঞ্জ হয়ে উত্তরাঞ্চলের গাইবান্ধা, রংপুরসহ বিভিন্ন জেলা হতে শ্রমিকরা জামালপুর-নান্দিনা-চেচুয়া-মুক্তাগাছা-ময়মনসিংহ- ঢাকা এবং জামালপুর-টাঙ্গাইল-ঢাকা মহাসড়কে রাজধানীতে প্রবেশ করছে।

এদিকে চলমান লকডাউনে পরিবহণ বন্ধ থাকায় ঢাকায় ফিরতে মহাবিপদে পড়েছেন শ্রমিকরা। বাস ও ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা ছুটছেন ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানযোগে। ভাড়া যাই হোক, রাজধানীতে ফিরতেই হবে। মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে, ভ্যানে হুড়োহুড়ি করে উঠছেন। কে আগে উঠবে, কে পিছে উঠবে এটা নিয়েও চলছে প্রতিযোগিতা। তবে করোনা পরিস্থিতিতে এমন চিত্র দেখা গেলেও মাস্ক পড়া ও স্বাস্থ্যবিধি মানা নিয়ে উদাসীনতা দেখা গেছে।

শ্রমিকরা জানান, পোশাক কারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তে কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের ১ আগস্ট উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এ কারণে লকডাউন উপেক্ষা করেই তাদের রাজধানীমুখী হতে হচ্ছে।

মাসুদ, রাজ্জাক, জুলেখাসহ কয়েকজন পোশাক শ্রমিক জানান, বাসসহ কোনো গণপরিবহন না থাকায় দ্বিগুণ খরচে জামালপুর থেকে ঢাকায় যেতে হচ্ছে।

পোশাক কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে যানবাহন চলাচলের বিষয়টি সুরাহা না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শ্রমিকরা।

জামালপুর-শেরপুর ব্রিজ এলাকায় শ্রমিক আব্দুল করিম বলেন, "ভোর থেকেই রওনা দিছি। কোন গাড়ি না থাকায় বাচ্চাদের নিয়ে মহাবিপদে পড়ছি।"

সরিষাবাড়ির জগন্নাথগঞ্জ ঘাটে ঢাকামুখী শ্রমিকদের ভিড়। জগন্নাথগঞ্জ ঘাট দিয়ে সহজেই ভুয়াপুর হয়ে ঢাকার আশুলিয়া, সাভার, গাজীপুরে যাওয়া যায়। এই কারণে এখানে শ্রমিকদের পদচারণা বেশি। পাশের কাজীপুর উপজেলার সবাই এ রুটেই চলাচল করে।

পোশাক শ্রমিক শেফালি বলেন, "যেভাকেই হোক আজকের মধ্যেই গাজীপুর যেতে হবে। রোববার কাজে না গেলে ছুটি বাতিল হয়ে যাবে। বেতনও কাটবে।"

সাভারে যাওয়া পোশাক শ্রমিক আলমগীর বলেন, "আজ না যেতে পারলে এক মাসের মধ্যে আর কাজে যোগ দিতে পারব না। তাই আজই যেতে হবে। না গেলে চাকরি থাকবে না। তাই কিছুই করার নাই।"

এদিকে পোশাক শ্রমিকরা অভিযোগ করে জানান, বকশীগঞ্জ থেকে জামালপুর পর্যন্ত  সিএনজির ভাড়া নেওয়া হচ্ছে তিনশ থেকে চারশ টাকা। আর শেরপুরে নেওয়া হচ্ছে দুইশ থেকে তিনশ টাকা করে। পরিবহণ পাওয়া যাচ্ছে না। পাওয়া গেলেও ভাড়া বেশি নিচ্ছে। নিরুপায় হয়েই ছুটতে হচ্ছে।