ওদের টার্গেট ব্যাংক কিংবা পোস্ট অফিসে পেনশন বা সঞ্চয়পত্রের টাকা তুলতে আসা বয়স্ক ব্যক্তিরা। একেক সময় একেক জেলায় গিয়ে সেখানকার তথ্য সংগ্রহ করে কাজে নামে। এরপর কমান্ডো স্টাইলে শিকারকে ঘিরে সুবিধামতো সময়ে ছো মেরে নিয়ে যায় টাকা ভর্তি ব্যাগ। একজন ব্যাগ নিয়ে পালায়, আরেকজন পালানোর রাস্তা করে দেয় আর আরেকজন থাকে পলায়ন পর চোরকে প্রটেকশন দিতে। এভাবে ১৭ বছর ধরে চালিয়ে যাচ্ছিল এই অপরাধ। তবে এবার পুলিশের জালে গ্রেপ্তার হয়েছে এই সংঘবদ্ধ চক্রের দুই সদস্য। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১৩ লাখ টাকা। চক্রের অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
বুধবার (১৬ মার্চ) দুপুরে ফরিদপুরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অর্থ) জামাল পাশা।
গ্রেপ্তাররা হলেন খুলনার হরিণটানা থানার গোলাডাঙ্গা গ্রামের মৃত ফটিক শেখের ছেলে ফারুক শেখ (৬০) ও মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান থানার পূর্বকোলা গ্রামের মো. জৈনদ্দিন ওরফে জিয়াউদ্দিনের ছেলে মো. আলী (৪৫)।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কর্মকর্তা সুমন রঞ্জন কর বলেন, গত ৬ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরের প্রধান পোস্ট অফিসে বাবার পেনশনের ২০ লাখ টাকা তুলতে যান নজরুল ইসলাম (৪২) নামে এক ব্যক্তি। টাকা নিয়ে বের হওয়ার সময় থেকেই তাকে ঘিরে ধরে এবং পোস্ট অফিসে সুবিধা করতে না পেরে টাকা নিয়ে বের হওয়ার পর নজরুলকে অনুসরণ করে সোনালী ব্যাংক পর্যন্ত যায়। নজরুল ম্যানেজারের কক্ষের সোফায় টাকার ব্যাগ রেখে ক্যাশ অফিসারের সঙ্গে কথা বলতে পাশের রুমে যায়। এ সময় ওই দুইজন সেখানে ছিল। তাদের একজন টাকার ব্যাগটি নিয়ে যায়। আরেকজন রাস্তা ক্লিয়ার করে দেয় এবং অপরজন তাকে প্রটেক্ট করার জন্য অবস্থান নিয়ে দাঁড়ায় যাতে কেউ ধাওয়া করলে সে বাধা দিতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে সোনালী ব্যাংকের নিম্নমানের সিসি ক্যামেরার তথ্য উল্লেখ করে সুমন রঞ্জন কর আরও বলেন, “ওই ফুটেজ থেকে জড়িতদের চিহ্নিত করতে অত্যন্ত বেগ পেতে হয়েছে। খড়ের গাদা থেকে সুই খুঁজে বের করার মতো আমরা এ তদন্ত কাজ চালিয়েছি বলে তারা উল্লেখ করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন এসআই শামীম হাসান।”
পুলিশ বলছে, ঘটনার সময় সোনালী ব্যাংকে গার্ড ছিল না। এ ঘটনায় ব্যাংকের ম্যানেজার জড়িত সম্ভাবনা না থাকলেও তার অবহেলা আছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানানো হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা গেলে বাকি টাকা উদ্ধার হবে।