সোনারগাঁয়ে লোকজ উৎসব উপলক্ষে মতবিনিময়

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২২, ০৭:০৮ পিএম

আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে সোনারগাঁয়ে শুরু হচ্ছে মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব। বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন চত্বরে এ মেলা হবে। মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব উপলক্ষে মতবিনিময় সভায় ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. আহমেদ উল্লাহ এ তথ্য জানান। আবহমান গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্য বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন প্রতিবছরই মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব আয়োজন করে।

ফাউন্ডেশনের লাইব্রেরি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. আহমেদ উল্লাহর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, সোনারগাঁ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম মুস্তফা মুন্না, সোনারগাঁ থানার তদন্ত ওসি মো. সাইফুল ইসলাম ইসলাম, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তার ফেন্সি, ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক রবিউল ইসলাম, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার, সাংবাদিক হাসান মাহমুদ রিপন, মনিরুজ্জমান মনির, রবিউল হুসাইন, মাজহারুল ইসলাম, ফরিদ হোসেন, কামরুজ্জামান প্রমুখ। 

দেশীয় সংস্কৃতির পুনরুজ্জীবনে আয়োজিত মাসব্যাপী এ লোক কারুশিল্প মেলায় কর্মরত কারুশিল্পী প্রদর্শনী, লোকজ প্রদর্শনী, পুতুল নাচ, বাইস্কোপ, নাগরদোলা, গ্রামীণ খেলাসহ বাহারী পণ্যসামগ্রীর প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে। মাসব্যাপী উৎসবে প্রতিদিন লোকজ মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্কুলের ছেলেমেয়েদের পরিবেশনায় বিলুপ্তপ্রায় গ্রামীণখেলা, পুতুল নাচ, কর্মরত কারুশিল্পীর করুপণ্যের প্রদর্শনীসহ নানা অনুষ্ঠান হবে। মেলা চলাকালীন সময়ে ওই এলাকার যানজট, আইনশৃঙ্খলা ও খাদ্যের মূল্যতালিকা নিয়ে মতবিনিময় সভায় আলোচনা করা হয়।

করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া মেলা ২৩ মার্চ পর্যন্ত মাসব্যাপী চলবে। এবারের মেলায় কর্মরত কারুশিল্পী প্রদর্শনীর ২৪টি স্টলসহ ১০০টি স্টল বরাদ্দ করা হয়েছে। গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রথিতযশা ৪৮ জন কারুশিল্পী সক্রিয়ভাবে অংশ নেবেন।

এ বছর সোনারগাঁয়ের দারুশিল্পের কারুকাজ, হাতি ঘোড়া, মমী পুতুলের বর্ণালী-বাহারি পণ্য, জামালপুরের তামা-কাঁসা-পিতলের শৌখিন সামগ্রী, সোনারগাঁওয়ের বাহারি জামদানি শিল্প, বগুড়ার লোকজ বাদ্যযন্ত্র, কক্সবাজারের শাঁখা ঝিনুক শিল্প, ঢাকার কাগজের শিল্প, রাজশাহীর মৃৎশিল্প- মাটির চায়ের কাপ, শখের হাঁড়ি, বাটিক শিল্প, খাদিশিল্প, মণিপুরী তাঁতশিল্প, রংপুরের শতরঞ্জি শিল্প, টাঙ্গাইলের বাঁশ-বেতের কারুপণ্য, সিলেটের বেতশিল্প, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সুজনিকাঁথা, কিশোরগঞ্জের টেরা কোটা পুতুল, খাগড়াছড়ি ও মৌলভীবাজারের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কারুপণ্য, মৌলভীবাজারের বেতের কারুশিল্প, ঠাকুরগাঁয়ের বাঁশের কারুশিল্প, মাগুড়া ও ঝিনাইদহের শোলাশিল্প, চট্টগ্রামের তালপাতার হাতপাখা, পাটজাত কারুপণ্য, লোকজ অলংকার শিল্প, নাগরদোলা, বায়োস্কোপ ও মিঠাই-মন্ডার পসরা থাকলে স্টলগুলোতে।

এছাড়াও লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবে বাউলগান, পালাগান, কবিগান, ভাওয়াইয়া ও ভাটিয়ালী গান, জারি-সারি ও হাছন রাজার গান, লালন সংগীত, মাইজভান্ডারী গান, মুর্শিদী গান, আলকাপ গান, গাঁয়ে হলুদের গান, বান্দরবান, বিরিশিরি, কমলগঞ্জের মণিপুরী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শরিয়তি-মারফতি গান, ছড়া পাঠের আসর, পুঁথি পাঠ, গ্রামীণ খেলা, লাঠি খেলা, দোক খেলা, ঘুড়ি ওড়ানো, লোকজ জীবন প্রদর্শনী, লোকজ গল্প বলা ও পিঠা প্রদর্শনী ইত্যাদি থাকবে।