সুন্দরবনে বনবিভাগের টহল থাকলেও কমছে না বন্যপ্রাণীর শিকার। প্রচার হচ্ছে বন্যপ্রাণীর মাথা, চামড়া, ভুঁড়ি ও মাংস। বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মোংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন ইমেইলে দুটি চিত্রল হরিণের ছবি পাঠায় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে। ছবি দেখে মনে হচ্ছিল সবই আছে শুরু প্রাণ নেই প্রাণী দুটির।
কোস্টগার্ড জানিয়েছে, আজ দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খুলনার কয়রা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তারা দুটি হরিণের খণ্ড-বিখণ্ড শরীর উদ্ধার করেছে। সেগুলির মধ্যে ছিল দুটি হরিণের মাথা, চামড়া, ভুঁড়ি, পা ও দুই কেজি মাংস। তাদের দাবি চোরাকারবারি ও শিকারিরা এগুলি রেখে পালিয়ে গেছে। পরে তা আন্দার মানিক ফরেস্ট অফিসে হস্তান্তর করা হয়।
বনকর্মকর্তারা জানান, সুন্দরবনে নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। কিছু চোরা ও শিকারি গ্রেপ্তার হলেও, অনেকই ধরাছোঁয়ার বাহিরে। এদিকে গহীন সুন্দরবনে হরিণ শিকার বাড়ছে।
বনবিভাগের জনবল এবং অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে চাইলেও সুন্দরবনকে চোর ও শিকারিমুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না বলে অভিযোগ বনকর্মকর্তাদের।
সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া খাল ও নদীতে মাছ শিকারকারী জেলেরা বলেন, নৌকা ও ট্রলার নিয়ে সংঘবদ্ধ চোর ও শিকারিরা সুন্দরবনের গহীনে প্রবেশ করে। কেওড়া গাছে মাচা পেতে হরিণের গতিবিধি লক্ষ্য করে তারা। হরিণের দল নদী ও খালের চরাঞ্চলে ঘাস খেতে আসে। শিকারিরা সেসব স্থানে ফাঁদ পেতে হরিণ শিকার করে। কখনো তারা গুলি ছুড়েও শিকার করে। গোপন আস্তানায় মাংস তৈরি করে সুন্দরবন সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে তারা। বন বিভাগের টহল টিমের সদস্যদের অভিযানে প্রায়ই আটক হয় হরিণ শিকারিরা। তারপরেও অনেকেই থেকে যায় ধরা-ছোঁয়ার বাহিরে।
বন্যপ্রাণী গবেষক ড. মঞ্জুরুল হান্নান খান বলেন, “শিকারিদের ধরতে সুন্দরবনে স্মার্ট পেট্রল এবং বনবিভাগের টহল থাকলেও অদৃশ্য কারণে শিকার কমছে না। ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় বেশ কয়েকজন নেতা ও জনপ্রতিনিধি এসব শিকারিচক্রের কাছ থেকে হরিণের মাংসসহ আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেন। এতে দিনের পর দিন সুন্দরবনে বন্যপ্রাণী শিকার বেড়ে যাচ্ছে।
কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের লে. কমান্ডার এম মামুনুর রহমান জানান, তারা চোর ও শিকারিদের ধরতে আরও কঠোর হচ্ছেন। ইতোমধ্যে তারা সুন্দরবন এলাকায় তাদের অভিযান জোরদার করেছেন।