উত্তরে কুয়াশা পড়ছে বৃষ্টির মত

আব্দুর রশিদ জীবন, রংপুর প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১, ২০২২, ০৬:০২ পিএম

‘মাঘের শীতে বাঘ কান্দে’ রংপুর অঞ্চলের এই প্রবাদ যেন সত্যি হয়েছে। এদিকে কুয়াশাও পড়ছে বৃষ্টির মতো। মধ্য মাঘে শীতের এই দাপটে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। আগামী ৩ থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি বৃষ্টি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) রংপুরে ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন ৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে রয়েছে প্রকৃতি। সূর্যের মুখ দেখা না যাওয়ায় দিনে-রাতে অনুভূত হচ্ছে ঠান্ডা। বাতাসের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ আর্দ্রতা কাছাকাছি আসায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তাপমাত্রা আরও নেমে যাওয়ার শঙ্কাসহ এই অবস্থা কমপক্ষে আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শীতের তীব্রতায় সকাল থেকে রংপুর নগরীতে মানুষের সমাগম কমে যায়। কমে গেছে যানবাহন চলাচল। হিমালয়ের বরফগলা বাতাসে শীত যেন আষ্টেপৃষ্ঠে ধরেছে মানুষসহ পশুপাখিকে। কুয়াশাও পড়ছে বৃষ্টির মতো। এতে রাস্তায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে মারাত্মকভাবে। বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা, ঘটছে প্রাণহানিও। অন্যান্য বছর ডিসেম্বরের শুরু থেকে এ অঞ্চলে শীতের তীব্রতা বাড়লেও এ বছর শীত নেমেছে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে। জানুয়ারিতে নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহ থেকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়ে এখন তা অনেকটা মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। শীতের হাত থেকে রক্ষা পেতে খড়কুটো জ্বালিয়ে শরীরের উষ্ণতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন দরিদ্র পরিবারগুলো। এমন আবহাওয়ায় ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে বিভিন্ন এলাকায়।

রংপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান জানিয়েছেন, গত কয়েকদিন ধরে রংপুরের তাপমাত্রা ৭ থেকে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। বাতাসের আর্দ্রতা কাছাকাছি হওয়ায় বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হতে না পারায় সূর্যের নাগাল পাওয়া যাচ্ছে না। পরিনতিতে আবারও শীত জেঁকে বসেছে। শৈত্যপ্রবাহ আরও দুই-তিনদিন থাকলেও আগামী ৩ থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে, জেলা প্রশাসক আহিসব আহসান জানিয়েছেন, শীত মোকাবেলায় প্রস্তুতি রয়েছে জেলা প্রশাসনের। ইতোমধ্যে নগরীর ৩৩ ওয়ার্ডসহ জেলার আট উপজেলা ও তিন পৌর এলাকায় সরকারিভাবে ৫২ হাজার কম্বল ও শীতবস্ত্র কেনার জন্য পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাওয়া গেছে আরও বরাদ্দ। এছাড়া নতুন বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।