জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার বগারচর ইউনিয়নের উত্তর ধারারচর গ্রামের একশ বছরের পুরোনো একটি রাস্তায় সাত মাস ধরে বাঁশের বেড়া দেওয়ায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে পাঁচটি পরিবার।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সামান্য ঝগড়াঝাটির কারণে বাঁশের বেড়া দিয়ে পাঁচটি পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। বাঁশের বেড়া দেওয়ায় যাতায়াতের একমাত্র পথটি বন্ধের ফলে ৭ মাস ধরে চলাচলে দুর্ভোগে পড়েছে বৃদ্ধ, অন্তঃসত্ত্বা ও স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ পরিবারগুলো। এ অবস্থায় তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অবরুদ্ধ পরিবারের এক সদস্য নুর নবী বলেন, “প্রতিবেশী মৃত অছমদ্দির ছেলে সহিজল হক ও সৈয়দ আলীর বাড়ির সামনে দিয়ে গিয়ে এক হাজার ফুট দূরে পাকা সড়কে উঠতে হয়। রাস্তাটি প্রায় একশ বছরের পুরোনো। দীর্ঘদিন যাবৎ আমরা চলাচল করে আসছি। তাদের বাড়ির সামনে দিয়ে যাতায়াত করার কারণে তারা প্রায়ই আমাদের তিরস্কারমূলক কথাবার্তা বলে থাকে। প্রায় সাত-আট মাস আগে সহিজল হকের ছেলে এনামুল হকের সঙ্গে সামান্য কথা-কাটাকাটি হয়। এ কথা-কাটাকাটির ঘটনার জের ধরেই সহিজল হক বাঁশের বেড়া দিয়ে যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দেয়। এতে পাঁচ পরিবারের নারী ও শিশুসহ প্রায় ৫০ জন সদস্য অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। অনেক পথ ঘুরে অনেক কষ্ট করে চলাফেরা করতে হচ্ছে আমাদের।”
অবরুদ্ধ পরিবারের অপর এক সদস্য ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিমি বেগম বলেন, “তাদের বাড়ির সামনে দিয়ে আমাদের যাতায়াত করতে হয়। তাই প্রায়ই আমাদের নানাভাবে তিরস্কার ও গালমন্দ করে তারা। চলাচলের রাস্তাটি অনেক পুরোনো এবং যাতায়াতের অন্য কোনো উপায় না থাকায় বাধ্য হয়ে আমরা যাতায়াত করে আসছিলাম। সাত-আট মাস আগে তারা বাঁশের বেড়া দিয়ে যাতায়াতের পথটি বন্ধ করে দেয়।”
অবরুদ্ধ পরিবারের মহিরন বেওয়া (৮০) বলেন, “কোনো কারণ ছাড়াই সাত-আট মাস আগে বাঁশের বেড়া দিয়ে আমাদের যাতায়াতের রাস্তাটি বন্ধ করে দিয়েছে প্রতিবেশী এনামুল হক। এলাকার অনেক লোক তাকে বাঁশের বেড়া খুলে দেওয়ার জন্য বলেছেন কিন্তু খুলে না দিয়ে আমাদের আরো হুমকি দিয়ে আসছে। এ অবস্থায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”
এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজ্জামান বলেন, “যাতায়াতের পথটি দীর্ঘদিনের পুরোনো। হঠাৎ করেই বাঁশের বেড়া দেওয়ায় ৫টি পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার গ্রাম্য শালিস বৈঠক হলেও সহিজল হকরা তা মানেনি।”
অভিযুক্ত এনামুল হক বলেন, “তাদের যাতায়াতের পথ আমরা বন্ধ করিনি। আমাদের জমিতে আমরা বাঁশের বেড়া দিয়েছি শুধু।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুনমুন জাহান লিজা বলেন, “কারও চলাচলের পথ বন্ধ করার কোনো সুযোগ নেই। অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”