জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়নের মেরুরচর হাছেন আলী উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও গোলাগুলিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এ ঘটনায় কেন্দ্রটি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ আল আমিনকে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় আল আমিন (২২) বাঘাডোবা গ্রামের আচ্ছা মিয়ার ছেলে।
সংঘর্ষে জড়িত কর্মীদের দেওয়া আগুনে পুলিশের একটি পিকআপ ও তিনটি মোটরসাইকেল পুড়ে যায়। এছাড়াও আনসারদের বহন করা একটি গাড়িও ভাঙচুর করে তারা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশি হামলায় আহত হয়েছেন চারজন সাধারণ লোক। এ সময় প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীর কর্মীদের আঘাতে আহত হয়েছে পাঁচ পুলিশ সদস্য। এ সময় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে পুলিশ। প্রার্থীর কর্মীদের ছোড়া পাল্টা গুলিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় ভোটকেন্দ্রসহ আশেপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে ভোটারসহ আহত সাধারণ লোকেরা দৌড়ে পালিয়ে যায়।
আহতরা হলেন বকশীগঞ্জ থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম সম্রাট, ওসি তদন্ত আব্দুর রহিম, কনস্টেবল আব্দুল আলিম (৪০), মো. শাহজাহান (৫৫), আ. মজিদ (৫৭) ও আনসার সদস্য আব্দুল আলিম (২৫)।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসকরা এ্যাম্বুলেন্সযোগে এসে ঘটনাস্থলেই আহত পুলিশ সদস্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছেন।
খবর পেয়ে র্যাব, ফায়ার সার্ভিসের দল, জামালপুর সদর উপজেলার এসিল্যান্ড তাহমিনা আক্তার, বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনমুন জাহান লিজা ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাল ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুপুর ১২টার দিকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. সিদ্দিকুর রহমান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী (আনারস) মনোয়ার হোসেন হকের এজেন্টদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এ খবর বাইরে ছড়িয়ে পড়লে লাঠিসোটা ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয়পক্ষের কর্মীরা। এ সময় পুলিশের একটি পিকআপে আগুন দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে নির্বাচনে ব্যবহৃত ৩টি মোটরসাইকেলেও আগুন দেয় উভয়পক্ষের উত্তেজিত লোকজন। পুলিশ গুলি করলে প্রার্থীদের কর্মীরাও পাল্টা গুলি চালায়। সংঘর্ষ চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। এ সময় একজন গুলিবিদ্ধ হয়। আহত হয় আরও তিনজন। উত্তেজিত কর্মীদের দেওয়া আগুনে গাড়িগুলো পুড়ে যাওয়ার সময় ফায়ার সার্ভিসের দল এসে আগুন নেভায়।
ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার বকশীগঞ্জ উলফাতুন্নেছা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান জানান, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কেন্দ্রটি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
ওসি মো. শফিকুল ইসলাম সম্রাট জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রথমে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এ সময় লাঠিসোটা ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া লোকজনের আঘাতে ৫ পুলিশ ও এক আনসার সদস্য আহত হন। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনমুন জাহান লিজা জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।