আত্রাইয়ে ইরি ধান কাটা-মাড়াই শুরু, ফলন নিয়ে শঙ্কা

আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ২২, ২০২৫, ০২:০৭ পিএম

নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বিভিন্ন মাঠে ইরি ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। তবে ধান কাটা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করলেও ফলন বিপর্যয় হওয়ার শঙ্কায় উপজেলার কৃষকেরা। এদিকে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, ফলন বিপর্যয়ের কোনো কারণ নেই। আশা করছি, কৃষকেরা ভালো ফলন পাবে।

এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন পাওয়ার আশায় বুক বেঁধে ছিলেন কৃষকেরা। কিন্তু গত ৬ এপ্রিলে শিলাবৃষ্টির এবং ঝড়ের কারণে মাঠের ধান নুয়ে পড়ায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যায় ফলে ধানের ফলন বিপর্যয় হতে পারে বলছেন কৃষকরা।

উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় মোট ১৮ হাজার ৭১০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড ৩ হাজার ৩০০ হেক্টর এবং উফশী ১০ হাজার ৪১০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৮৬ হাজার ১০০ মেট্রিক টন।

এ উপজেলায় ধান কাটা পুরোদমে শুরু হতে আরও ৭-১২ দিন সময় লাগতে পারে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অনেক কৃষকেরা আগেই ধান কাটতে শুরু করেছে। তাতে কৃষকের ধানের ফলনে তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। এর মধ্যে এখন কৃষকেরা যে জাতের ধান কাটতে শুরু করেছে, তা জিরাশাইল জাতের ধান। এই ধান‌ আগেই কাটা যায়। এখন পর্যন্ত উপজেলায় ১০ হেক্টর জমির ধান কর্তন হয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার ভোঁপাড়া ইউনিয়নের ভোঁপাড়া-কাশিয়াবাড়ী মাঠে নুয়ে পড়া জিরাশাইল জাতের ধান দলবেঁধে কাটছে কৃষকেরা।

কৃষক আক্তারুল আলম কোয়েল বলেন, “আমি এ বছর ৪৫ বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছি। ফসল ভালোই হয়েছিল, কিন্তু কয়েকদিন আগে হঠাৎ শিলাবৃষ্টি এবং ঝড় হওয়ার কারণে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে। অনেক জমিতে পানি আটকে রয়েছে। যদি আর কয়েকদিন ধানগুলো মাঠে থাকে আবারও যদি বৃষ্টি হয় তাহলে ধান নষ্ট হয়ে যাবে।”

পাঁচুপুর ইউনিয়নের গুড়ন‌ই গ্রামের কৃষক বাবু বলেন, “আমি ৩০ বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছি। পাঁচ বিঘা জমির ধান কেটে মাড়াই করেছি। শিলাবৃষ্টির কারণে গত বছর চাইতে এ বছর ধানের ফলন কিছুটা কম হয়েছে।”

মনিয়ারী ইউনিয়নের নগেন্দ্রনগর গ্রামের আলী হোসেন নামের এক কৃষক বলেন, “প্রতি বিঘা জমিতে ১৫-১৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বিঘা প্রতি জিরা ধান পাচ্ছেন ১৯-২০ মণ। বাজারে যা বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকা মণ। এবার ফলন নিয়ে শঙ্কায় আছি।”

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রসেনজিৎ তালুকদার বলেন, “বর্তমান মাঠে জিরাশাইল ধান কাটা শুরু হয়েছে। আমাদের উপজেলার যে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা আছে, তা অর্জিত হবে যদি সামনে আর বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ না আসে। কৃষকদের ফলন নিয়ে যে শঙ্কা করছে, আশা করছি তেমনটা হবে না।”