মসজিদে গিয়ে ক্ষমা চাইলেন কনটেন্ট ক্রিয়েটর ইমু সাব্বির

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ১০, ২০২৫, ১০:০৬ এএম
মসজিদে গিয়ে ক্ষমা চান ইমু সাব্বির। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার কনটেন্ট ক্রিয়েটর সাব্বির হোসেন ওরফে ইমু সাব্বির (২৮) মসজিদে গিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, আর কখনো মেয়েলি অঙ্গভঙ্গি করে কনটেন্ট তৈরি করবেন না। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) মুসল্লিদের উপস্থিতিতে উপজেলার কলেজ রোড মসজিদের ইমাম মুফতি আব্দুল হালিম কাসেমীর কাছে ক্ষমা চান তিনি।

সম্প্রতি সাব্বির হোসেনের তৈরি কনটেন্ট নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। অনেকে দাবি করেন, এসব কনটেন্ট সমকামিতা উসকে দিচ্ছে। রোববার মুক্তাগাছা কলেজ রোড মসজিদের ইমাম মুফতি আব্দুল হালিম কাসেমী ইসরায়েলবিরোধী এক সমাবেশে সাব্বিরের বিচার দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘এই সমাজকে কলুষিত করার জন্য ইমু সাব্বির জঘন্য অপরাধ করেছেন। প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, দ্রুত তাকে গ্রেপ্তার করে ফাঁসি দেওয়া হোক।’

ইমামের এমন বক্তব্যের পর সাব্বিরের বাড়িঘর ভাঙার গুঞ্জন ওঠে; যা তাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে। এর প্রতিক্রিয়ায় সাব্বির তার ফেসবুক আইডিতে একটি ভিডিও পোস্ট করেন, যেখানে তিনি বলেন, ‘মুক্তাগাছা আমার প্রিয় জন্মভূমি। এখানে আমি আমার মাকে নিয়ে থাকতে চাই আর এই দুনিয়ায় আমার মা ছাড়া কেউ নেই। আমি ও আমার ভাগনে ফানি ভিডিও করে মানুষকে বিনোদন দিয়ে আসছি চার বছর ধরে। কখনো ছেলে, কখনো মেয়ে হয়ে। কিন্তু তা যে সমকামিতা প্রচার করছে, বুঝতে পারিনি। আমি আর মেয়েলি অঙ্গভঙ্গিতে কনটেন্ট করব না।’

তবে আতঙ্ক কাটাতে মঙ্গলবার স্থানীয় মসজিদের ইমামকে নিয়ে কলেজ রোড মসজিদে গিয়ে মুফতি আব্দুল হালিম কাসেমীর কাছে ক্ষমা চান সাব্বির। সেখানে উপস্থিত মুসল্লিদের সামনে তিনি মুচলেকা দেন। যেখানে উল্লেখ করেন, ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়ে তিনি অনেক কনটেন্ট তৈরি করেছেন, যা মুক্তাগাছার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। এরপর ইমামের হাত ধরে তিনি শপথ নেন, আর কখনো মেয়েলি অঙ্গভঙ্গিতে কনটেন্ট তৈরি করবেন না।

এ বিষয়ে কনটেন্ট ক্রিয়েটর সাব্বির হোসেন বলেন, ‘অভাবের সংসারের হাল ধরতে চার বছর ধরে ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে আসছি। বুঝেশুনে কখনো ইসলাম ও সমাজবিরোধী কোনো কাজ করিনি। তবে এখন বুঝতে পেরেছি, এই কাজ করা আমার ঠিক হয়নি। আমি কিশোরগঞ্জ চলে গিয়েছিলাম। পরে ভেবে দেখলাম, প্রিয় জন্মভূমি ছেড়ে থাকা সম্ভব নয়। তাই মসজিদে গিয়ে হুজুরের কাছে ক্ষমা চেয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘কিছু ভিডিও ইতিমধ্যে ডিলিট করা হয়েছে। ভবিষ্যতে মেয়েলি পোশাকে আর ভিডিও করব না।’