ব্যানারে বিএনপি নেতার নাম না থাকায় বন্ধ হলো মাহফিল

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ১০:২৯ এএম

লক্ষ্মীপুরে ব্যানারে নিজের নাম না থাকায় এক তাফসির মাহফিলে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। মাহফিল বাস্তবায়ন কমিটি বলছে, অভিযুক্ত বিএনপি নেতা মাহফিলের প্যান্ডেলের কাপড় খুলে নিয়েছেন। পরে বিশৃঙ্খলা এড়াতে মাহফিল বন্ধই করে দেওয়া হয়।

অভিযুক্ত বিএনপি নেতার নাম আলমগীর হোসেন। তিনি লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। তিনি দাবি করেছেন, মাহফিল বন্ধ করতে তিনি বলেননি।

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে মোহাম্মদিয়া জামে মসজিদ মাঠে ‘তাফসিরুল কুরআন মাহফিল ও ইসলামী সংগীত সন্ধ্যার’ কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরে তা আর হয়নি।

মাহফিল বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি জামাল উদ্দিন কবির ও মোহাম্মদিয়া জামে মসজিদের খতিব আহছান হাবিব জানান, ব্যানারে নিজের না দেওয়ায় মাহফিলের আয়োজনে বাধা দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপি নেতা আলমগীর এসে মাহফিল বন্ধ রাখার জন্য বলে যান। তিনি মাহফিলের প্যান্ডেলের কাপড় খুলে নেন। বিদ্যুতের সংযোগ ও মাইকের জন্য লাগানো তার কেটে দেওয়া হয়। পরে বিশৃঙ্খলা এড়াতে মাহফিল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এ নিয়ে আলমগীর হোসেন বলেন, “ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিমকে মাহফিলে প্রধান অতিথি করা হয়। এলাকার প্রতিনিধি হিসেবে আমাকে প্রতিবছর দাওয়াত দেওয়া হয়। এবার আমাকে কোনো কিছুই জানানো হয়নি। আমি যেহেতু বিএনপির রাজনীতি করি, এ জন্য আমাকে বিষয়টি জানাতে পারত। তখন কে বা কাকে অনুষ্ঠানে রাখা যায়, তা নিয়ে সমন্বয় করা যেত। আমি এসব বলেছি। তবে মাহফিলের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে বলেছি।”

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই মাহফিল বন্ধ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। অনেকেই বলছেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিকে অতিথি না করায় মাহফিল বন্ধ করা হয়েছে। তবে এটি সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান।

হাসিবুর বলেন, “মাহফিলের বিষয়টি স্থানীয়। কিন্ত যারা জেলা বিএনপির আহবায়ক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিকে জড়িয়ে কথা বলছেন, এটা ঠিক নয়। কারণ বিষয়টি শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বা বিএনপির কোনো নেতাকর্মী জানেন না। মাহফিলের স্থান নিয়ে কোনো ঝামেলা থাকলে, তা স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করা উচিত।”

জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মহিসন কবির মুরাদ বলেন, “মাহফিলটি বন্ধ করা কোনোভাবেই ঠিক হয়নি। যারা বন্ধ করেছেন, তারা অন্যায় করেছেন। এই মাহফিলের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের জামায়াতের মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ড. রেজাউল করিমের।”

এ নিয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মোন্নাফ বলেন, “মাহফিল বন্ধের বিষয়টি কেউ জানায়নি। কী কারণে মাহফিল বন্ধ সেটাও জানি না। শুক্রবার সন্ধ্যায় বিষয়টি জানার পর খোঁজখবর নিচ্ছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”