লেপ-তোশক-জাজিম তৈরিতে ব্যস্ত শেরপুরের কারিগররা

শেরপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২৪, ০১:০৫ পিএম

গারো পাহাড় ঘেরা শেরপুর। রাত ও ভোরে শীত অনুভূত হচ্ছে। ক্রমেই চাহিদা বাড়ছে লেপ, তোষক এবং জাজিমের। এ জন্য শীতের শুরুতেই জেলাজুড়ে লেপ, তোষক ও জাজিম তৈরিতে কারিগরদের মাঝে ব্যস্ততা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শীতের আগাম প্রস্ততি নিতে লেপ, তোষক বানাতে ক্রেতারাও ভিড় করছেন দোকানগুলোতে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, জেলা শহরের তেরাবাজার মোড়ের দোকানগুলোতে সুই সুতো নিয়ে কাজ করছে কারিগররা। এখানকার লেপ তোষক তৈরির ১০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মযজ্ঞ চলছে সকাল ৮টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত।

দোকান মালিক কুতুব উদ্দিন মুন্সি ও রহমত মোল্লা বলেন, এবছর বাজারে প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লেপ-তোষক তৈরি উপকরনের খরচও বেড়েছে।

এবার প্রতি গজ লেপ তৈরির কাপড়ের দাম ৬০ টাকা, তোষক ৫০ টাকা এবং প্রতি গজ জাজিম তৈরি কাপড়ের দাম রাখা হচ্ছে ১২০ টাকা করে। এ ছাড়া প্রতি কেজি কার্পাস তুলার দাম ৪০০ টাকা, শিমুল তুলার দাম ৪৫০ টাকা, আঙ্গুরি তুলার দাম ১২০ টাকা ও প্রতি কেজি জুটের দাম রাখা হয়েছে ৫০ টাকা।

ব্যবসায়ী হাসান মিয়া বলেন, এবছর রেডিমেড লেপ বিক্রি হচ্ছে ৪০০-১৪০০ টাকার মধ্যে, তোষক বিক্রি হচ্ছে ৫০০-১৫০০ টাকার মধ্যে এবং জাযিম বিক্রি হচ্ছে  ৩৫০০-৪৫০০ হাজার টাকার মধ্যে। এছাড়া বালিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৫০০ টাকার মধ্যে।

শাকিল বেডিং স্টোরের কারিগর আকাশ হাসান বলেন, ৮ বছর থেকে শেরপুরে লেপ তোষক তৈরির কাজ করি। আমাদের প্রতিষ্ঠানে মোট ১০ জন কাজ করে। প্রতিদিন গড়ে ১৫টি লেপ তোষক তৈরির অর্ডার শেষ করতে পারি।

জিহাদ বেডিং স্টোরের মোতালেব মিয়া বলেন, “১০ বছর থেকে কাজ করছি এই প্রতিষ্ঠানে। প্রতি বছরের মত এবারও শীতের আগে আমাদের ব্যাস্ততা বেড়েছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে ক্রেতাদের লেপ, তোষক তৈরির কাজ।”

মোতালেব আরো বলেন, “শেরপুর সদর উপজেলা সহ নকলা, নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবর্দির কারিগররাও লেপ তোষক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে। একটি লেপ তৈরি করলে ১৫০ টাকা ও তোষক তৈরি করতে পারলে প্রতিজন ২০০ টাকা মজুরী পাওয়া যায়।”

শেরপুর সদর উপজেলার পাকুরিয়া ইউনিয়নের হোসনে আরা বলেন, “আমরা গরিব মানুষ। কম্বলের যে দাম সেটা কিনার সামর্থ নাই। একারনে অল্প টাকা দিয়ে লেপ বানিয়ে নিচ্ছি।”

শেরপুর পৌরসভা এলাকার শীতলপুর মহল্লার বজলুর রশিদ বলেন, “দিনের বেলায় শীত অনুভূত না হলেও রাতে শীতের তীব্রতা বাড়ে। তাই পাতলা কাঁথা দিয়ে শীত নিবারন হয় না। এজন্য পরিবারের সদস্যদের জন্য দুটি লেপ বানিয়ে নিচ্ছি। খরচ পড়েছে ১৮০০ টাকা।”