জমে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা

জয়পুরহাট প্রতিনিধি প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২৪, ০২:০৪ পিএম

জয়পুরহাটে প্রতি বছরের মতো এবারও নবান্ন উৎসবকে ঘিরে জমে উঠেছে মাছের মেলা। জেলার কালাইয় উপজেলায় অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম সপ্তাহে নবান্ন উৎসব উপলক্ষে এক দিনের মাছের মেলা অনুষ্ঠিত হয়।

কালাই-মোকামতলা মহাসড়কের পাশে কালাই পৌরসভার পাঁচশিরা বাজারে মাছ ব্যবসায়ীরা নানাভাবে ডাক হাকের মাধ্যমে ক্রেতাদের মাছ কিনতে আগ্রহী করে তুলছেন। সেখানে সুন্দর করে সাজানো কাতলা, রুই, মৃগেল, চিতল, ব্ল্যাককার্প, গ্রাসকার্প, কালবাউশ, ব্রিগেড, সিলভার কার্পসহ হরেক রকমের মাছ রয়েছে।

রোববার (১৭ নভেম্বর) ভোর থেকে সারি সারি হয়ে বসা মাছের মাছের মেলায় উপচেপড়া ভিড়। তিন কেজি থেকে শুরু করে ১৩ কেজি ওজন পর্যন্ত মাছ বিক্রি করতে দেখা গেছে মেলায়। মাছের আকার অনুযায়ী প্রতি কেজি মাছ ৩৫০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারাও ব্যাপক উৎসাহের সঙ্গে কিনছেন মাছ। আবার দেখতে এসেছেন অনেকেই।

শুধুই মাছ কেনার বিষয় নয়, আছে একধরনের জামাই-মেয়েদের কেনার প্রতিযোগিতা। কোন জামাই কত বড় মাছ কিনলেন, সেটাই আসল বিষয়। প্রতিযোগিতায় নীরব অংশগ্রহণ করেন শ্বশুরেরাও।

এই মেলা কেন্দ্র করে ঘরে ঘরে এলাকার মেয়ে-জামাইসহ স্বজনদের আগে থেকেই দাওয়াত দেওয়া হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শত শত মানুষ মেলার উৎসব দেখতে আসেন। এ দিনটিকে ঘিরে এখানে দিনব্যাপী চলে মাছ কেনা ও বিক্রি করার উৎসব।

মেলায় মাছ কিনতে আসা কালাই পৌরসভার মুলগ্রাম গ্রামের গোলাম মোস্তফা, আহম্মেদাবাদ ইউনিয়ন হাতিয়র গ্রামের ডা. জহুরুল ইসলাম, কালাই কলেজ পাড়া মহল্লার মনোয়ারা বেগম বাকী জানান, নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে গতবারের চেয়ে এবার মাছের মেলায় প্রচুর আমদানি হয়েছে। তবে দাম অনেকটা বেশী।

মাছ ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, ১২০০ টাকা কেজি দরে ১২ কেজি ওজনের কাতল মাছ বিক্রি করেছি বগুড়ার এক ক্রেতার কাছে। এটাই এ মেলার সবচেয়ে বড় মাছ।

মাছ ব্যবসায়ী রাজু, বাবু ছাইফুল, মানিকসহ অনেকে জানান, মাছের মেলায় প্রচুর লোক সমাগম হলেও বেচাকেনা সে তুলনায় কম।

হাট ইজারাদারের সহপাঠী ময়েন উদ্দিন বলেন, শুধু জয়পুরহাট নয়, বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যাপারীরা এ মেলায় বিভিন্ন ধরনের মাছ এনে এ মেলায় বিক্রি করেন। এবার মাছের বাজার স্বাভাবিক আছে এতে করে সবাই মাছ কিনতে পারবেন।

কালাই উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তৌহিদা মোহতামিম বলেন, “মেলাটিকে সার্বক্ষণিক পরিদর্শনে রাখা হয়েছে। মেলায় কেউ যেনো নিষিদ্ধ মাছ বিক্রি করতে না পারেন, সেদিকে আমাদের কঠোর নজরদারি রয়েছে।”