চাঁদা চেয়ে হুমকি, না দেওয়ায় দোকানে আগুন

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২৪, ০৯:০৩ এএম

দোকানির মোবাইলে কল দিয়ে দাবি করা হয় ২০ হাজার টাকা চাঁদা। চাঁদা না দিলে দোকানে বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো এবং দোকানিকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। দুই সপ্তাহ যেতেই দোকানটিতে আগুন লাগে। দোকানির অভিযোগ, মোবাইলে হুমকি দেওয়া ব্যক্তিই পরিকল্পিতভাবে দোকানে আগুন দিয়েছে।

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার কেরানীহাটে দোকানটিতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। 

যে দোকানিকে হুমকি দেওয়া হয়েছে, তার নাম মোহাম্মদ জোনাইদ। কেরানিহাটে শাহ জব্বারিয়া ম্যাট্রেস হাউস নামে একটি দোকান রয়েছে তার। 

দোকানের মালিক মোহাম্মদ জোনাইদ জানান, আগুনে ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার। আগুন লাগার পর একই ব্যক্তি আবার ফোন দিয়ে বলেছে, চাঁদা না দেওয়ায় দোকানে আগুন দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি থানায় অভিযোগ করবেন।

কেরানীহাটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেবল জোনাইদ নয়, কেরানীহাটের অন্তত ২০ দোকানিকে মোবাইলে চাঁদা চেয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ১৩ জন এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ ও সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। 

গত অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি থেকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত সময়ে এসব অভিযোগ ও জিডি করা হয়।

কেরানীহাট প্রগতিশীল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদীন বলেন, একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে শাহ জব্বারিয়া নামের ম্যাট্রেসের দোকানটির সামনে মুখে মাস্ক পরা এক ব্যক্তিকে দেখা গেছে। দোকানটির শাটার ফাঁক করে কোনো কিছু ঢুকিয়ে দেয় ওই ব্যক্তি। এরপর ওই দোকানে আগুন জ্বলে ওঠে। এ ঘটনার পর থেকে কেরানীহাট এলাকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

কেরানীহাট প্রগতিশীল ব্যবসায়ী সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে দুটি ফোন নম্বর থেকে দোকানিদের কল করে চাঁদা দাবি করা হচ্ছে। চাঁদা দাবি করা ব্যক্তি নিজেকে ‘এলাকার বাদশাহ’ পরিচয় দেয়। চাঁদা না দিলে দোকানে আগুন দেওয়া ও দোকানিদের হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

কেরানীহাটে মুদি মালামাল বিক্রির দোকান রয়েছে কবির আহমদের। তিনি জানান, গত ২৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি তাকে ফোন দিয়ে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে দোকানে আগুন দেওয়া ও তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। শুক্রবার বিকেলে ও রাতেও একই নম্বর থেকে কয়েকবার ফোন করে চাঁদা দাবি করা হয়েছে।

কেরানীহাট প্রগতিশীল ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনজুর আলম বলেন, এ পর্যন্ত ২০-২২ দোকানিকে ফোন করে চাঁদা চাওয়া হয়েছে। দোকানিরা এসব ঘটনায় থানায় অভিযোগ ও জিডি করার পরও প্রশাসন কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখেনি। চাঁদাবাজেরাই গত শুক্রবার ম্যাট্রেসের দোকানটিতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।

জানতে চাইলে সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল খান বলেন, মোবাইলের মাধ্যমে চাঁদা দাবি করার অভিযোগ পাওয়ার পর অজ্ঞাতপরিচয় ওই ব্যক্তিদের শনাক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। দোকানে আগুন দেওয়ার অভিযোগও গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।