নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে চাঁদা না পেয়ে দুর্বৃ্ত্তদের ছুরিকাঘাতে ইউনুছ আলী এরশাদ (৩৯) নামে যুবদলের এক নেতা নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তার আরও তিন ভাই আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক মাঞ্ছুরুল হক বাবরের ক্যাডারদের দায়ী করেছে নিহতের পরিবার।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে এরশাদের মৃত্যু হয়।
সঙ্গে থাকা তার ভগ্নিপতি আলমগীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে দুপুরে চরফকিরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দিয়ারা বালুয়া গুচ্ছগ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত এরশাদ মাঝি একই গ্রামের রইছল হকের ছেলে। তিনি স্থানীয় ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সভাপতি ছিলেন।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন নিহত এরশাদের ছোটভাই জহির উদ্দিন (৩৩), নিজাম উদ্দিন (২৮) ও ফরহাদ (২৪)। তাদেরকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল ও কোম্পানীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতের আরেক ছোটভাই সামছুদ্দিন (৩০) জানান, সকালে গুচ্ছগ্রাম ঘাটে লিজ নেয়া ভিটায় দোকানঘর নির্মাণ করতে যান এরশাদ মাঝি। এসময় চাঁদা দাবির পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে স্থানীয় জলদস্যু নিজাম ডাকাতের নেতৃত্বে তার বাহিনীর সদস্য সমীর, জাবেদ, ওবায়েদ, জিয়া, সুজন, তারেকসহ সন্ত্রাসীরা অতর্কিত হামলা চালায়।
নিহতের বাবা রইছল হক বলেন, “হামলায় নিজাম ডাকাতের ছেলে সন্ত্রাসী সুজন আমার ছেলে এরশাদের পেটে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। এতে তার পেটের নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে যায়। অপর আসামিরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আমার আরও তিন ছেলেকে জখম করেছে। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
স্থানীয় সূত্রের দাবি, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক মাঞ্ছুরুল হক বাবর বামনী নদী ও সন্দ্বীপ চ্যানেলে মাছ ধরার প্রত্যেক ট্রলার থেকে নিজাম ডাকাতের বাহিনী দিয়ে চাঁদা আদায় করেন। নিহত এরশাদের মাছ ধরার ট্রলার থাকায় তার থেকেও ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। পরে ৫ হাজার টাকা দিলেও বাকি টাকা না দেয়ায় নিজাম ডাকাত ও তার সন্ত্রাসীদের দিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটানো হয়।
নিহতের ভগ্নিপতি আলমগীর হোসেন দাবি করেন, “মুছাপুর বিএনপির সভাপতি মো. শাহজাহান ও তার ছোটভাই মাঞ্ছুরুল হক বাবরের সন্ত্রাসী বাহিনী চাঁদা না পেয়ে যুবদল নেতা এরশাদকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আসামিরা সবাই বাবর বাহিনীর সদস্য। তিনি (বাবর) এদেরকে দিয়ে নদীতে চাঁদাবাজি করান।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা মো. শাহজাহান ও তার ভাই মাঞ্ছুরুল হক বাবর নদীতে চাঁদাবাজি এবং হত্যাকাণ্ডে নিজেদের জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তাদের দাবি, `রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করতে না পেরে উপজেলা বিএনপির এক নেতা আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন।”
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বলেন, “ঘটনার সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বাদীর অভিযোগের ভিত্তিতে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”