সাড়ে সাত বছর পর এলাকায় ফিরে কথা বলার সময় আবেগে কেঁদে ফেলেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এম ওসমান ফারুক। আওয়ামী লীগের শাসনামলে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ ওঠার পর দেশ ত্যাগ করেন তিনি।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে নিজ এলাকায় ফিরে নেতাকর্মীদের সামনে আবেগাপ্লুত হয়ে কেঁদে ফেলেন বিএনপির এই নেতা।
এম ওসমান ফারুকের আগমন উপলক্ষে করিমগঞ্জ সরকারি পাইলট মডেল উচ্চবিদ্যালয় মাঠে গণসংবর্ধনার আয়োজন করে করিমগঞ্জ উপজেলা বিএনপি।
অনুষ্ঠানে ওসমান ফারুক বলেন, “আমি চুরি করিনি, ডাকাতি করিনি, জেনেবুঝে কখনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দিইনি। শুধু রাজনীতি করার কারণে আমাকে মিথ্যা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়।”
সাবেক এই শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “আমাকে রাজনীতিতে এনেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। তখন আমি আমেরিকায় বিশ্বব্যাংকে চাকরি করি। আমার চাকরির বেশ কয়েক বছর বাকি ছিল। শুধু বিএনপির রাজনীতির আদর্শের কারণেই দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার কথায় চাকরি ছেড়ে দিয়ে বাংলাদেশে এসে রাজনীতিতে যোগ দিই। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এলে আমাকে শিক্ষামন্ত্রী করা হয়। মন্ত্রী থাকাকালীন সর্বদাই উন্নয়নের চিন্তা করেছি। কিশোরগঞ্জ থেকে মন্ত্রী হলেও আমি শুধু নিজ জেলার উন্নয়ন করিনি। সারা বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নের চেষ্টা করেছি।”
ওসমান ফারুক বলেন, “বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হঠাৎ একদিন টিভিতে দেখি আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের নালিশ করা হয়েছে। সে জন্য আমাকে গ্রেপ্তার করা হবে। বিষয়টি দেখে আমি হতবাক। যিনি টিভিতে এসব বলছেন, তিনিও আমার এলাকার লোক। আমার মতো মানুষের বিরুদ্ধে যদি এমন একটি ডাহা মিথ্যা অভিযোগ তুলে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের ওপর কী পরিমাণ অত্যাচার-নিপীড়ন হয়েছে, সেটা ভাবা যায়।”
করিমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে গণসংবর্ধনায় বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, সহসভাপতি জালাল মোহাম্মদ গাউস, জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক ইসরাঈল মিয়া, আমিনুল ইসলাম, যুববিষয়ক সম্পাদক ও করিমগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক এরশাদ আহসান, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, করিমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দুলাল সিকদার প্রমুখ।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান বিএনপি নেতা ওসমান ফারুক। তিনি ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে পাঁচ বছর শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন।