‘অনেকদিন ধরেই মাছ মাংস দিয়ে ভাত খাই না। সামান্য যে আয় হয় তা দিয়েই শাকসবজি দিয়ে কোনোমতে সংসার চালাই। বর্তমানে শাকসবজির যে দাম তাও মনে হয় আর কপালে জুটবে না। বাজারে গেলে হাত পা কেঁপে ওঠে। কোনো সবজির দাম ১০০ টাকার নিচে নয়। এমন চলতে থাকলে বেঁচে থাকাই দায়।’ এভাবেই বাজারে গিয়ে নিত্যপণ্যের দাম দেখে বুকভরা কষ্ট নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারা এলাকার দিন মজুর আ. সালাম।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) সরেজমিনে উপজেলার পাখিমারা সবজি বাজার ঘুরে দেখা যায়, লাউ প্রতি পিচ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা, টমেটো ৩০০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকা, লাউ শাকের ডগা ৪০ টাকা, বাঁধা কপি ৮০ টাকা, কাঁকরোল ১০০ টাকা, গাজর ২০০ টাকা, বেগুন ১৩০ টাকা, ধনেপাতা ৪০০ টাকা, কাঁচামরিচ ৪৫০ টাকা।
এছাড়াও অন্যান্য সবজি প্রায় ১০০ ছুঁই ছুঁই দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে ৩০ টাকা কেজিতে মিলছে পেঁপে। এ ছাড়া ৬০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে স্থানীয় সবজি ঢেঁড়স।
সবজি বিক্রেতা মো. ওমর ফারুক বলেন, “এর আগেও অনেক সময় প্রকারভেদে বিভিন্ন সবজির দাম বেড়েছে। তবে সম্প্রতি সময়ে কাঁচাসবজির ঊর্ধ্বমুখী বাজার মোটেই পড়তির দিকে নেই। সব শাকসবজির মূল্যই বৃদ্ধি পেয়েছে একযোগে। যার কারণে অধিকাংশ ক্রেতা দাম শুনেই মনঃক্ষুন হচ্ছেন। কেউ কেউ রাগান্বিত হয়েও চলে যান।”
আরেক এক ব্যবসায়ী মো. জসিম গাজী বলেন, “৮০ টাকারও বেশি খরচসহ লাল শাক কিনতে হয়েছে। আর বিক্রি করছি ১০০ টাকায়, ২৭০ টাকা দরে টমেটো কিনে বিক্রি করছি ৩০০ টাকায়, এছাড়াও বরবটি ১১০ ও গাজর ১৮০ টাকা, বেগুন ১২০ টাকা পাইকারি কেনা। লাগামহীন বাজারে তেমন বিক্রিও হচ্ছে না।”
সকালে পাখিমারা বাজারে সবজি কিনতে এসেছেন ফারক খান। তিনি বলেন, “প্রায় আধঘণ্টা ধরে ঘুরেও সবজি কিনতে পারছি না। মিষ্টি কুমড়াও ৭০ টাকা কেজি তাই ৪০ টাকায় পুঁইশাক কিনে ফিরতে হচ্ছে ঘরে। এর আগে কখনো একযোগে সব সবজির দাম বাড়েনি।”
এবিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, “সাড়া দেশেই সবজির মূল্য বেড়েছে। তবে বাজার নিয়ন্ত্রণে একটি টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়েছে। কেউ যাতে অতিরিক্ত মূল্য নিতে না পারে সে বিষয়ে আমাদের নজর থাকবে।”