অবৈধভাবে চা পাঠানোর সময় পঞ্চগড়ের একটি পারসেল অ্যান্ড কুরিয়ার সার্ভিস থেকে ৭৫ বস্তা তৈরি চা জব্দ করেছে কাস্টমস।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে পঞ্চগড় জেলা শহরের রওশনাবাগ এলাকার এজেআর পারসেল অ্যান্ড কুরিয়ার সার্ভিস নামের প্রতিষ্ঠান থেকে চাগুলো জব্দ করা হয়। এর আগে সোমবার বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে ওই পাঁচ প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা চাগুলো এই পারসেল অ্যান্ড কুরিয়ারে বুকিং করে।
জব্দ করা ৭৫ বস্তা চায়ের প্রতিটি বস্তায় প্রায় ৫০ কেজি করে চা রয়েছে। বিপুল পরিমাণ এই চা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে পাঠানো হচ্ছিল রংপুর ও চট্টগ্রামে।
এসব চায়ের বস্তার মধ্যে গ্রিন স্কাই টি হাউজের ৮ বস্তা চা, নাফিজ জান্নাত টি হাউজ ২০ বস্তা, সাদিয়া টি হাউজ ১৫ বস্তা, চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের ৩০ বস্তা ও ধানসিঁড়ি ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের ২ বস্তা চা ছিল।
কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই জেলার পারসেল অ্যান্ড কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কালোবাজারে চা লেনদেন করে আসছিল একটি চক্র। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাতে জেলা শহরের রওশনাবাগ এলাকার এজেআর পারসেল অ্যান্ড কুরিয়ার সার্ভিস নামের প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায় কাস্টমস। এসময় তারা পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের ৭৫ বস্তা চায়ের কাগজে গরমিল পায়। এমনকি এর মধ্যে ৫৪টি বস্তার গায়ে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কোনো নাম ঠিকানা ছিল না। সোমবার বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে ওই পাঁচ প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা চাগুলো ওই পারসেল অ্যান্ড কুরিয়ারে বুকিং করে। তবে অভিযানের সময় তাদের কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে ৭৫ বস্তা চা জব্দ করে উত্তর বাংলা ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল টি ওয়্যার হাউজে পাঠানো হয়।
এজেআর পারসেল অ্যান্ড কুরিয়ার সার্ভিসের পঞ্চগড় শাখার ব্যবস্থাপক বিকাশ চন্দ্র রায় বলেন, “আমরা নিয়ম অনুযায়ী চায়ের বস্তাগুলো বুকিং নিয়েছি। ৬ দশমিক ৩ এর যে মূসক চালান ও প্রাতিষ্ঠানিক চালান রয়েছে তা দেখে মালামাল বুকিং করেছি। চালান থাকায় এখানে কোনটা বৈধ-অবৈধ তা দেখার কোনো সুযোগ নেই। এর মাঝে রাতে কাস্টমস ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন এসে মালামালগুলো যাচাইবাছাই করবে বলে জব্দ করেছে।
পঞ্চগড় কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা ইমরুল হোসেন পাটোয়ারী বলেন, “আমরা সোমবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ৭৫ বস্তা চা জব্দ করেছি। বস্তার গায়ে কিছু প্রতিষ্ঠানের নাম থাকলেও অনেক বস্তায় কোনো প্রতিষ্ঠানের নাম নেই। আমরা এই সকল চায়ের নথি পরীক্ষা করে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করব। তবে আমরা প্রাথমিকভাবে দেখছি চাগুলো রংপুর চট্রগ্রামের দিকে যাচ্ছিল। যে নথিগুলো দিয়েছে, তাতে আমাদের প্রাথমিকভাবে সন্দেহ হয়েছে।”
[100002]
পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের উন্নয়ন কর্মকর্তা আমির হোসেন বলেন, “৭৫ বস্তা চা জব্দ করে উত্তর বাংলা ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল টি ওয়্যার হাউজে রাখা হয়েছে। পরে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”